যে কোনও মৃত্যুই খুব বেদনার৷ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর শুনে গত কাল আমি চমকেছি , বেদনাবোধ করেছি৷ বার বার ভেবেছি , কত লোক খামোকাই বেঁচে আছে , সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আরও কিছু বছর বেঁচে থাকলেই পারতেন , লিখতে পারতেন আরও কিছু লেখা৷ আজকাল আটাত্তর বা ঊনআশি বছর বয়সকে মৃত্যুর উপযুক্ত বয়স বলে মনে হয় না৷ দীর্ঘকাল চলত্শক্তিহীন অবস্থায় বিছানায় পড়ে না থাকলে , মাথা সম্পূর্ণ অকেজো না হয়ে গেলে , বয়স নব্বইয়ের ওপর না উঠলে মৃত্যুকে মেনে নিতে আমাদের কষ্ট হয়৷
প্রায় অর্ধেক দিন টেলিভিশন খোলা ছিল৷ টেলিভিশনে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের শেষ দিককার কিছু ছবি দেখে অবাক হয়েছি৷ তাঁর স্বাস্থ্য যে এত ভেঙে পড়েছিল , আমার জানা ছিল না৷ বড়ই রুগ্ন এবং অসুস্থ দেখাচ্ছিল৷ জানি না কোনও কঠিন অসুখে ভুগছিলেন কি না৷ অবাক হয়েছি আরও একটি কারণে৷ শিল্পী -সাহিত্যিকদের মধ্যে দু’একজন , যাঁদের আমি ব্যক্তিগত ভাবে জানি ভীষণ নিন্দা করেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের , তাঁরা ভূয়সী প্রশংসা করছিলেন৷ প্রকাশ্যে মনের কথা বলার লোক এত কমে যাচ্ছে চারদিকে৷
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা -গল্প -উপন্যাস -নিবন্ধ পড়ছি সেই কিশোর -বয়স থেকে৷ তাঁর খুব কম লেখাই আছে , যে গুলোকে ‘যাচ্ছেতাই ’ বা ‘কিচ্ছু হয়নি ’ বলে নাকচ করে দিয়েছি৷ তাঁর যে জিনিসটা আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগত , তা হল নাস্তিকতা নিয়ে তাঁর লুকোছাপা না করা৷ ধর্মনিরপেক্ষতা , দেশভাগ , মুক্তিযুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান , বাংলা এবং বাঙালি , নাস্তিক্যবাদ , অস্তিত্ববাদ ইত্যাদি নিয়ে তাঁর যে মত ছিল , তা একেবারেই আমার মত৷ এত মতের মিল যাঁর সঙ্গে , তাঁর সঙ্গে বিরোধ কেন ! অবশ্য বিরোধটা আমার দিক থেকে কখনও ছিল না৷ তিনিই গোপনে গোপনে আমার পায়ের তলার মাটি সরাতে চেষ্টা করছিলেন৷ কেন করছিলেন , কী প্রয়োজন ছিল তাঁর , আজও জানি না৷
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে চিনি বাংলাদেশ থেকেই৷ আশির দশকের শেষ দিকে পরিচয়৷ বাংলাদেশে দেখা হত , কলকাতায় বেড়াতে এলেও দেখা হত৷ বাড়িতে নেমন্তন্ন করতেন৷ কবিতা এবং কলাম লিখে তখন আমার বেশ নাম হয়েছে দেশে৷ তার পর বিরানব্বইয়ের ‘আনন্দ পুরস্কার ’ পাওয়ার পর তো সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে আবারও দেখা হল৷ অনেককে বলতেও শুনেছি , ‘সুনীলই তো তসলিমাকে আনন্দ পুরস্কার পাইয়ে দিয়েছে৷ ’ আমিও তাই ভেবেছিলাম৷ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কেও এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে দেখিনি৷ বেশ কয়েক বছর পরে অবশ্য জেনেছিলাম সুনীল গঙ্গোপাাধ্যায়ই ‘আনন্দ পুরস্কার ’ কমিটির দশ জন সদস্যের মধ্যে একমাত্র সদস্য যিনি ৷
আমার পুরস্কার পাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন৷ শুধু বিরানব্বইয়ে নয় , দু’হাজার সালেও বিরোধিতা করেছেন , যখন দ্বিতীয়বার ‘আনন্দ পুরস্কার ’ পেয়েছি৷ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখে অবশ্য কখনও আমি বুঝতে পারিনি তিনি গোপনে গোপনে আমার বিরুদ্ধে কাজ করেন৷ বন্ধুর মতো , শুভাকাঙ্ক্ষীর মতো , দাদার মতো , পিতার মতো তিনি পাশে ছিলেন বলেই বিশ্বাস করতাম৷ অবশ্য সব ভাবনার অবসান হল , যখন তিনি প্রকাশ্যে আমার ‘দ্বিখণ্ডিত ’ বইটি নিষিদ্ধ করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবদার করলেন এবং বইটি শেষ অব্দি নিষিদ্ধ করিয়ে ছাড়লেন৷ একজন লেখকের জন্য এর চেয়ে ভয়ঙ্কর হূদয়বিদারক আর কী হতে পারে , যখন সে প্রত্যক্ষ করে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ লেখক তার বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গিয়ে , মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এই অজুহাতে তার বই নিষিদ্ধ করার জন্য রাজা -মন্ত্রীর কাছে দৌড়ায় ! সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অবিশ্বাস্য বিরোধিতা সত্ত্বেও , কখনও দেখা হলে স্বভাবসুলভ সশ্রদ্ধ আন্তরিক ব্যবহারই ৷
যে গৃহহীন মানুষটা পশ্চিমবঙ্গকে ভালবেসে সব ছেড়েছুড়ে এসেছিল , তাকেই কি না তাড়িয়ে দেওয়ার ষ ..ডযন্ত্র ! রাজনীতিতে কত কাণ্ডই ঘটে! কিন্ত্ত তাই বলে সাহিত্যিকরা আচরণ করবেন রাজনীতিকের মতো !৷
করেছি৷ কখনও আমি ভুলে যাইনি তিনি আমার প্রিয় লেখক , কিশোর বয়স থেকে আমি তাঁর লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছি , কখনও ভুলে যাইনি অন্য একশ বিষয়ে তাঁর মতের সঙ্গে মেলে আমার মত৷ নিজেকে বুঝিয়েছি৷ তিনি মুখে আমার লেখা ভীষণ পছন্দ করেন বললেও হয়তো সত্যিকার পছন্দ করতেন না , সেই কারণেই আমার পুরস্কার পাওয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন৷ নিজেকে বুঝিয়েছি , মুক্ত চিন্তার পক্ষে বললেও তিনি হয়তো আমার লেখা পছন্দ করতেন না বলে আমার বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন , এই যাওয়ার অধিকার হয়তো তাঁর আছেই৷
কলকাতায় দু’হাজার চার সাল থেকে নিজের মতো বাস করতে শুরু করেছি সাহিত্যের গুরুকে গুরুপ্রণাম না করেই৷ তার পর আমার নিষিদ্ধ হওয়া ‘দ্বিখণ্ডিত ’কে হাইকোর্ট থেকে মুক্ত করিয়ে এনেছি৷ আমার স্পর্ধার ফল অবশ্য পেতে শুরু করেছি শীঘ্র৷ লক্ষ্য করলাম আমি প্রায় সবখানে ব্রাত্য৷ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বন্ধুরা , যারা এক সময় আমারও বন্ধু ছিল , আমাকে রীতিমত ত্যাজ্য করেছেন৷ ধীরে ধীরে কিছু পত্রিকায় আমার লেখা ছাপা বন্ধ হয়ে গেল , কিছু প্রকাশক আমার বই প্রকাশও বন্ধ করে দিলেন৷ আমি অনেকটা একঘরে৷ এক সময় তো সরকার থেকে চাপ এল আমি যেন কলকাতা ছেড়ে চলে যাই৷ যে গৃহহীন মানুষটা পশ্চিমবঙ্গকে ভালোবেসে সব ছেড়েছুড়ে এসেছিল , তাকেই কি না তাড়িয়ে দেওয়ার ষ ..ডযন্ত্র ! ৷
রাজনীতিতে কত কাণ্ডই ঘটে! কিন্ত্ত তাই বলে সাহিত্যিকরা আচরণ করবেন রাজনীতিকের মতো ! যখন আমি পশ্চিমবঙ্গের মাটি কামড়ে পড়েছিলাম , বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন , পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায় আমাকে তাড়াবার নানা রকম আয়োজন করে হেরে যাচ্ছেন , তখন স্বয়ং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ফোন করে আমাকে বলেছেন রাজ্য ছাড়তে৷ বলেছেন , ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে , তোমাকে মেরে ফেলার জন্য এক দল লোক তৈরি হচ্ছে , তুমি রাজ্য ছাড়ো ’’৷ ঠিক যেমন ‘দ্বিখণ্ডিত ’ নিষিদ্ধ করার জন্য ‘আজকাল ’ পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন , ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে , এই বইয়ের জন্য দাঙ্গা বাধবে , তাই আমরা বই নিষিদ্ধ করেছি , স্ফুলিঙ্গকে বারুদের কাছে যেতে দিইনি ’’৷ শাসকের সুরে কথা বলতেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়৷
এই সমাজ সাংঘাতিক নোংরা , পুরুষতান্ত্রিক বলে সুনীলকে ‘বড় মানুষ ’ আখ্যা দিয়ে গুণকীর্তন করে চাটুকাররা৷ যারা সুনীলের যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছে , তারা মুখ বুজে থাকলেও জানে এবং মানে যে সুনীল মানুষ হিসেবে বড় ছিলেন না৷ সে দিন কথা প্রসঙ্গে আমাকে এবং আরও মেয়েকে সুনীল যৌন হেনস্থা করেছেন , এ কথা বলার পর সুনীলকে দোষ দেওয়ার বদলে লোকেরা দোষ দিল আমাকে৷ ছি ছি করল আমাকে ! সুনীলও দিব্যি অস্বীকার করলেন খবর৷ যেমন অস্বীকার করেন আমার বই নিষিদ্ধ করার জন্য তিনি যে উঠে পড়ে লেগেছিলেন , সে সব ঐতিহাসিক ঘটনা৷ এত বড় লেখক কী নির্দ্বিধায় মিথ্যে বলেন ! আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই৷ আজ যদি কোনও সভ্য দেশে কোনও পুরুষ লেখকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আসে , লোকেরা লেখককে , সে যত ব .ড লেখকই হোক না কেন , ছি ছি করবে৷ কিন্ত্ত এ দেশে উল্টো ! হবে না কেন , এখনও ধর্ষিতা হলে ধর্ষণের জন্য বেশির ভাগ লোক ধর্ষিতাকেই দোষী সাব্যস্ত করে৷ এ দেশের থেকে এর চেয়ে ভালো আশা করার কী -ই -বা আছে !যত শত্রুতাই সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় করুন না কেন , আমি নিজেকে তাঁর থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখেছিলাম , তাঁর শত্রুতা করিনি বা তাঁর পাকা ধানে মই দিইনি৷ আমি বিশ্বাস করি , সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক৷ আমি হয়তো কাছ থেকে তাঁর চরিত্রের মন্দ দিকটা দেখেছি , বাইরের লোকদের তা দেখা সম্ভব হয় না বলে ভাল দিকটাই দেখেন৷ তাতে কী ? সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা তাঁরা যেমন ভালোবাসেন , আমিও তেমন বাসি৷ এবং এ -ও জানি , সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে যদি সামান্য কোনও সততা থেকে থাকে , তিনি নীরবে নিভৃতে আমার সততার কারণে আমাকে মনে মনে শ্রদ্ধা করেছেন৷ তাঁর অজস্র চাটুকার ছিল৷ চাটুকাররা প্রতিদিন তাঁর কাছে ভিড় করত৷ ওদের ছাড়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের রাত কাটেনি দিন কাটেনি , কিন্ত্ত ওদের তিনি খুব ভালোবাসতেন বা শ্রদ্ধা করতেন বলে আমার কখনও মনে হয়নি৷
41 Comments
Taslima hoyto bhule giyechen Hungry Generation mvement er somoy Sunil kibhabe Moloy Raychoudhury r pashe dariyechilen. Jai hok eta khub swabhabik eirokom akjon bikrito manosikotar mohilar keno onar nijer deshe sthan hoy na. Infact Taslima bibranti r modhye thakleo onar proti amar respect chilo je uni kono kono khetre ontoto sotyi ta bolte janen....kintu seta ar roilo na.
achhe, mane taslima-r kotha 200 vag sotyi dhorleo, 'ekjon lekhok/
creative byaktiwo Manush hisebe Boro chhilen ki na' e torker kono mane
hoy na. sunil gangopadhyay ke amra chini Neera ba Atmoprokash ba
Purba-pashchim er jonye,, Maha-purush hisebe na.
dhore neoa jaak tini khuuub kharap ekta lok, dhore neoa jaak Taslima-r
sob ovijog sotyo,, tateo, mithye na bolte ki, sunil bangla vashar
mrityudin porjonto o-ghoshito Rock-star theke jaben. dwidha na kore bola
jay: tar 3/4 te lekha-r jonye oboshyo Nobel+Booker+Pen+oi jatyo
international acclaim praponyo chhilo. sei manush ti gota dui rape ar 3
te khun ar Singur ke somorthon korleo tate somuho masterpiece er
oijwolyo ektuo kome na. borong, paper moto, kolongker moto chikchik
kore. lekhok er prime kaj valo lekhok howa, Valo Manush howa na.
sroshtar 'valo manush-i' smoronyo thake na, valo srrishti smoronyo +
(agami-r kachhe) prerona jogyo thake. Rock.
achhe, mane taslima-r kotha 200 vag sotyi dhorleo, 'ekjon lekhok/
creative byaktitwo Manush hisebe Boro chhilen ki na' e torker kono mane
hoy na. sunil gangopadhyay ke amra chini Neera ba Atmoprokash ba
Purba-pashchim er jonye,, Maha-purush hisebe na. dhore neoa jaak tini
khuuub kharap ekta lok, dhore neoa jaak Taslima-r sob ovijog sotyo,,
tateo, mithye na bolte ki, sunil bangla vashar mrityudin porjonto
o-ghoshito Rock-star theke jaben. dwidha na kore bola jay: tar 3/4 te
lekha-r jonye oboshyo Nobel+Booker+Pen+oi jatyo international acclaim
praponyo chhilo. sei manush ti gota dui rape ar 3 te khun ar Singur ke
somorthon korleo tate somuho masterpiece er oijwolyo ektuo kome na.
borong, paper moto, kolongker moto chikchik kore. lekhok er prime kaj
valo lekhok howa, Valo Manush howa na. sroshtar 'valo manush-i' smoronyo
thake na, valo srrishti smoronyo + (agami-r kachhe) prerona jogyo
thake. Rock.
achhe, mane taslima-r kotha 200 vag sotyi dhorleo, 'ekjon lekhok/
creative byaktitwo Manush hisebe Boro chhilen ki na' e torker kono mane
hoy na. sunil gangopadhyay ke amra chini Neera ba Atmoprokash ba
Purba-pashchim er jonye,, Maha-purush hisebe na. dhore neoa jaak tini
khuuub kharap ekta lok, dhore neoa jaak Taslima-r sob ovijog sotyo,,
tateo, mithye na bolte ki, sunil bangla vashar mrityudin porjonto
o-ghoshito Rock-star theke jaben. dwidha na kore bola jay: tar 3/4 te
lekha-r jonye oboshyo Nobel+Booker+Pen+oi jatyo international acclaim
praponyo chhilo. sei manush ti gota dui rape ar 3 te khun ar Singur ke
somorthon korleo tate somuho masterpiece er oujwolyo ektuo kome na.
borong, paper moto, kolongker moto chikchik kore. lekhok er prime kaj
valo lekhok howa, Valo Manush howa na. sroshtar 'valo manush-i' smoronyo
thake na, valo srrishti smoronyo + (agami-r kachhe) prerona jogyo
thake. Rock.
মৃতদের মহান বানানোর খেলা আমরা ভালোই জানি। শুধু ভুলে যাই আমরা কেউই ভুলের উদ্র্ধে না। কেউ এটা ধরিয়ে দিলে আমরা তার উপরেও চড়াও হই। তসলিমার লেখাটা ভালো লাগলো মূলত এই কারণে যে, অন্তত একজন লেখকের প্রতি সম্মান জানালো পরিমিতি রেখে। লেখকের মর্যাদা দিয়ে। যেখানে লেখক একজন মানুষ। ভালো মন্দের বিচারটা আপেক্ষিক।
তসলিমাকে আঘাত না করে তার তোলা অভিযোগকে খণ্ডন করলে তা যৌক্তিক হবে।
আর একটা কথা কোনও জিনিস আমার দর্শনের সাথে না মিললেই তাকে 'অপদার্থ' বলে দাগিয়ে দেওয়াটা আসলে কূপমণ্ডূকতার পরিচয়। কাজেই তসলিমা-কে তাঁর মত থাকতে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তাঁর সঙ্গে মতের অমিল হলেই তিনি খারাপ এটা কেমন কথা? মনে রাখা দরকার শুধুমাত্র ভাল বা শুধুমাত্র খারাপ গুণের অধিকারি কোনও মানুষ হতে পারেন না। কাজেই তসলিমা-র ভাল দিকটা নিয়েও চর্চ্চা দরকার আছে।
বই আপলোডের ব্যাপারে কিছু লিখতে চাই।প্রগতি প্রকাশনের কিছু রাজনীতিক বা চিরায়ত সাহিত্যের বই থাকলে আপলোড করুন।আর সালমান রুশদির 'মিডনাইটস চিলড্রেন'-এর বঙ্গানুবাদ এবং ইমদাদুল হক মিলনের 'পরাধীনতা' আপলোড করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করলাম।
জয়তু আমারবই.কম
একাধিক সত্ত্বা থাকে বা থাকতে পারে। একজন লেখকের ক্ষেত্রে তার লেখক সত্ত্বাই বড়
হয়ে প্রকাশিত হয়, বিশেষ করে তার পাঠকের কাছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে
পারে, একজন লেখকের ব্যক্তি সত্ত্বা একজন পাঠকের কাছে আদৌ বিচার্য
হওয়া উচিত কী না। সেদিক থেকে তসলিমা নাসরিন নিজেকে লেখক
সুনীলের মূল্যায়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে পারতেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তসলিমা ঠিক জানেন না কোথায় তাকে থামতে হবে। তিনি ব্যক্তি
সুনীলের মৃত্যুর পর তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছেন, তা একান্তভাবেই
ব্যক্তিগত কুৎসার মতই শোনায়। এরকমই মনে হয় যে আসলে, লেখক সুনীলের
তথাকথিত মহত্বের কথা বলার অছিলায় আসলে তসলিমা নেমেছেন সুনীলের চরিত্র হননে। একজন
সৎ লেখক ( যেহেতু তসলিমা নিজেকে সে রকমটিই ভাবেন) কখনও এটি করবেন না।
তসলিমার ব্যক্তিগত জীবনাচরণ ( যতটুকু তিনি নিজেই প্রকাশ করেছেন) বা তার অধিকাংশ অভিমতের সাথে এতটুকু সহমত পোষণ না করেও আমি
তার লেখা পড়ি; তার স্বচ্ছন্দ নিজস্ব ভাষাভঙ্গি এর অন্যতম কারণ। কিন্তু আমার বরং
দুঃখই হয় যে, তসলিমা তার শক্তির অপব্যয় করেন অহেতুক বিতর্কের জন্ম দিয়ে (
বিতর্কিত হওয়ার একধরণের মর্ষকামী আনন্দ তিনি বোধ হয় পেতে শুরু করেছেন তার লেখক
জীবনের সূচনা থেকেই); তার প্রতিটি পুরুষ বন্ধুর সাথে তার বন্ধুত্বের অবসান ঘটেছে
বা সম্পর্ক নির্লিপ্ত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তথাকথিত ' যৌন' হয়রানীর সে রকমটিই ভাবেন) কখনও এটি করবেন না। তসলিমার ব্যক্তিগত জীবনাচরণ ( যতটুকু তিনি
নিজেই প্রকাশ করেছেন) বা তার অধিকাংশ অভিমতের সাথে এতটুকু সহমত পোষণ না করেও আমি
তার লেখা পড়ি; তার স্বচ্ছন্দ নিজস্ব ভাষাভঙ্গি এর অন্যতম কারণ। কিন্তু আমার
বরং দুঃখই হয় যে, তসলিমা তার শক্তির অপব্যয় করেন অহেতুক বিতর্কের জন্ম দিয়ে (
বিতর্কিত হওয়ার একধরণের মর্ষকামী আনন্দ তিনি বোধ হয় পেতে শুরু করেছেন তার লেখক
জীবনের সূচনা থেকেই); তার প্রতিটি পুরুষ বন্ধুর সাথে তার বন্ধুত্বের অবসান ঘটেছে
বা সম্পর্ক নির্লিপ্ত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তথাকথিত ' যৌন' হয়রানীর অভিযোগের মধ্য দিয়ে। সত্যিই যদি তাই হবে, এদের কারুর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেয়ার সৎ সাহস তার হলো না
কেন? আসলে তস্লিমা তার আশেপাশের প্রতিটি বিষয় ও মানুষকে খুচিয়ে
রক্তাক্ত করেই আনন্দ পান, আর সেই সাথে নিজেও রক্তাক্ত হন। এতে তার কি লাভ হয়েছে? আমার তো মনে হয় না যে ইতিহাস তাকে কোন আইকোনোক্লাস্ট হিসেবে
মনে রাখবে। একজন উদবাস্ত লেখক হিসেবে, লেখার প্রচন্ড শক্তি থাকে
সত্বেও, তিনি করুণাই পেয়ে যাবেন। কারণ, ক্রমাগত বর্জ্য
ঘাটার মত শুধু ঘৃণা, বিদ্বেষ, আর কুৎসা- ব্যাক্তি, সমাজ, সংস্কৃতি বা ধর্মের বিরুদ্ধে- ছড়িয়ে আর যাই হোক মহৎ লেখক
হওয়া যায় না।
tachara ei dhawroner kawtha Suniler chole jabar pore bolar uddesso ki? aage bolenni keno... jodi sotti-i tNar pathikader (ebong gunograhi mohilader) shabdhan koranota aapnar uddesso hoye thake.
পাঠকদের কাছে বেক্তি সুনীল এর থেকে লেখক সুনীল অনেক বড়ো. এভাবে ওনার
মৃত্যু তে স্রোধ্য দেখতে না পড়ুন অপমান করবেন না. নিজেকে ছোটো করতে চান করুন অপরকে করবেন না.