সেই সময় হচ্ছে ১৯ শতকের কলকাতার প্রেক্ষিত,যখন কলকাতার বাবু কালচার চরম উৎকর্ষতা লাভ করেছে ইংরেজ মাসনের সুবাদে। তখন অলিতে গলিতে কান পাতলেই কানে আসবে বাঈজির গজল,ঠুংরি আর মোসাহেব পরিবেষ্ঠিত জমিদারদের বিচরন।নবশিক্ষিত যুবকেরা প্রাণপনে ইংরেজ অনুকরণে মত্ত,গ্রাম শোষন করে চলছে প্রজাশাষন, চলছে সংস্কৃতি চর্চা,সমাজ ও ধর্মসংস্কার,তরুণ বিদ্যাসাগর রেড়ির তেলের আলোয় রাত জেগে লিখছেন আদর্শলিপি,তৈরি হচ্ছে বাংলা গদ্যের ভিত,জেগে উঠছে মধ্যবিত্ত সমাজ এ সেই সময়ের গল্প।
এ উপন্যাসের মূল নায়ক একটি বিশেষ সময়। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিজে লিখেছেন,
"আমার কাহিনীর পটভুমিকা ১৮৪০ থেকে ১৮৭০ সাল। এবং এই কাহিনীর মূল নায়কের নাম সময়। সময়কে রক্ত মাংসে জীবিত করতে হলে অন্তত একটি প্রতীকি চরিত্র গ্রহন করতে হয়। নবীনকুমার সেই সময়ের প্রতীক। তার জন্মকাহিনী থেকে তার জীবনের নানা ঘটনার বৈপরীত্য,শেষ দিকে এক অচেনা যুবতীর মধ্যে মার্তৃরুপ দর্শন এবং অদ্ভুত ধরনের মৃত্যু,সবই যে সেই প্রতীকের ধারাবাহিকতা,আশা করি তা আর বিশদভাবে বলার প্রয়োজন নেই।প্রয়োজনীয় কথা শুধু এই যে,নবীনকুমারের আদলে এক অকালপ্রয়াত অসাধারন ঐতিহাসিক যুবকের কিছুটা আদল আছে,অন্য কোনো প্রসিদ্ধ পুরুষের নাম বা জীবনকাহিনী আমি বদল করিনি....।"
সত্যিই তাই। নাটকের শুরুতে যেমন দেওয়া থাকে পাত্রপাত্রীর নাম ও পরিচয়,তেমনভাবে এই বিপুল বর্ণাঢ্য উপন্যাসের গোড়াতেই যদি দেওয়া থাকত নবীনকুমারের সমকালীন চরিত্রাবলীর নাম,বস্তুতই বিস্ময়কর মনে হতে সেই তালিকা।মাইকেল,বিদ্যাসাগর,ডিরোজিও,হেয়ার সাহেব,দেবেন ঠাকুর--কে নেই। সমগ্র উনবিংশ শতাব্দীই যেন চোকের সামনে জীবন্ত। যেটুকু তফাৎ তা হল,গবেষকের রচনায় প্রাণ থাকে না,সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সেই প্রাণটি প্রতিষ্ঠা করেছেন।
এক দুরন্ত সময়ের জীবন্ত চলচ্চিত্র 'সেই সময়'।বঙ্কিম ও আকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত। নতুন ঝকঝকে স্ক্যান। ডাউনলোড করুন।
Download
4 Comments
"প্রথম আলো"
"পূর্ব পশ্চিম"
তিনটি আমর বই