কাল সন্ধ্যায় ডেনভারের বিশাল দিগন্তজুড়ে বিরাট চাঁদ উঠেছিল। পূর্ণ চাঁদ। মানে পূর্ণিমা। জ্যোৎস্না।
হঠাৎ হুমায়ূনের কথা মনে হলো। জ্যোৎস্না বড় বেশি ভালোবাসত হুমায়ূন।
জ্যোতিকে নিয়ে ঘরে ফিরছিলাম কাল। ওর তিন নম্বর ইনজেকশন দেওয়া হলো গতকাল। কী অদ্ভুত পরিহাস! হুমায়ূন চলে যাওয়ার ঠিক এক মাস পরে অতি আকস্মিকভাবে জ্যোতির প্রস্টেট ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসা শুরু হয়। দেড় মাস ধরে প্রতিদিন রেডিয়েশন থেরাপি চলে। সেটা শেষ হলে, এখন তিন মাস পর পর একটি হরমোন ইনজেকশন নিতে হয় ওকে। এ ছাড়া প্রতিদিন মুখে খাবার বড়ি। এমনি চলবে পুরো দুই বছর। তার পরই কেবল জানা যাবে জ্যোতির প্রকৃত অবস্থা, সম্ভাব্য নিরাময়ের অবস্থান। জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, যার মনপ্রাণ পড়ে আছে ঢাকায়, নিতান্ত বাধ্য হয়েই এই ফেব্রুয়ারিতে দেশে যেতে পারেনি। আমারও যাওয়া হয়নি একই কারণে।
কালকের মতো এত বড় চাঁদ অনেক দিন দেখিনি আকাশে। আকাশ দেখার সময়-সুযোগই বা কোথায়? সময় যদি বা জোটে, তীব্র শীত আর অনবরত তুষারপাত ঘরবন্দি করেই রাখে এখানে বেশির ভাগ সময়। অন্তত এই জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির রাতে। আকাশ দেখার, শোবার ঘরের জানালা দিয়ে দূরে রকি মাউন্টেইন পর্বতচূড়া দেখার সুযোগ হয় না আর। কলোরাডোর রাজধানী ডেনভার শহরটা পাহাড়-পর্বত দিয়ে ঘেরা হলেও মূল শহরটি আসলে মোটেই পাহাড়ি নয়। এটি একটি ভ্যালি, মানে উপত্যকা। সমুদ্র জলরাশির স্তর থেকে এক মাইল উঁচুতে অবস্থিত বলে ডেনভারকে মাইল-হাই সিটি বলেও লোকে জানে। তা ছাড়া নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের বিশাল মরুভূমির গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে বলে কলোরাডোতেও লম্বা গাছপালা, বনজঙ্গলের উপস্থিতি খুব কম। ফলে ডেনভারের দিগন্তটা সব সময়ই বিশাল, প্রকৃত অর্থেই গোলাকার ও খোলামেলা লাগে। সেই বিস্তৃত দিগন্তজুড়ে গতকাল পূর্ণিমার আসর বসেছিল যেন। আমার মনে পড়ে, হুমায়ূন গত বছর যখন নিউ ইয়র্ক থেকে আমাদের ডেনভারের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল, তখনো এমন জ্যোৎস্না নেমেছিল রকি মাউন্টেইন পাহাড়ের ওপর, যেখানে সেই রাতে আমরা দল বেঁধে ভ্রমণে বেরিয়েছিলাম।
জ্যোৎস্না যেমন সব কালিমা, কলুষতা, সব অন্ধকার দূর করে দিয়ে তার সহজ-সরল প্রত্যক্ষ আবির্ভাব বা প্রকাশে চারদিক ঝলমলে আলোতে আলোকিত করে দেয়, আমার কেন জানি মনে হয়, হুমায়ূনও তেমনি অত্যন্ত সহজ, সরল ও সোজাসুজিভাবে তার কথা, তার বক্তব্য, তার সৃজনশীল রচনায় পেশ করে বলে তার এই ভণিতাহীন, খোলাখুলি, সোজাসাপ্টা কথা, বর্ণনা, চরিত্র মানুষের মনে এক গভীর আবেদন সৃষ্টি করে। তার গল্প, উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্রের চরিত্রদের কার্যকলাপ ও কথাবার্তার সঙ্গে নিজেদের একাত্মতা খুঁজে পান পাঠক অথবা দর্শক।
ব্যক্তিগতভাবেও হুমায়ূন অত্যন্ত স্পষ্টভাবে নিজের চিন্তা, ভাবনা কি ভালো লাগা মন্দ লাগার কথা সোজাসুজি ও অনায়াসে প্রকাশ করতে পারত। কোনো কিছু আড়াল না করেই, কে কী ভাবছে তা নিয়ে মাথা না ঘামিয়েই। আমার মনে পড়ে, ওর পথ্যের ব্যাপারে আমি ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ না করেই নিজের সঞ্চিত জ্ঞান থেকে কিছু বিশেষ পরামর্শ দিয়েছিলাম। আমি ডেনভার ফিরে আসার পর শাওন ও তার মা আমাকে উল্লেখ করে সে কথা হুমায়ূনকে একদিন মনে করিয়ে দিলে সে ভীষণ চটে যায়। সেই মুহূর্তে তার সমস্ত রাগ ও বিরক্তি এসে পড়ে আমার ওপর। অনেক রাতে ফোন করে রীতিমতো আমাকে ধোলাই করে হুমায়ূন। আমি যে তার ডাক্তার নই, সেটা মনে করিয়ে দিতেও কার্পণ্য করে না। ওদিকে শাওন ও তার ছোট বোন সেঁজুতি তো কেঁদেকেটে আকুল, আমার সঙ্গে হুমায়ূন এভাবে কথা বলায়। কিন্তু আমি হুমায়ূনকে তত দিনে ভালো করেই জেনে গেছি। ফলে কিচ্ছু মনে করিনি। অত্যন্ত স্বাধীনচেতা স্বভাবের হুমায়ূনের কাছে আমার অযাচিত পরামর্শ অনধিকার চর্চা মনে হতেই পারে। কিন্তু আমি সঙ্গে সঙ্গেই বুঝতে পারি, রাগের মাথায় আমাকে গালাগাল করলেও রাগটি একটু কমলেই সে ভীষণ অনুতপ্ত হবে এবং তখন তার খুব খারাপ লাগবে। সেটা বুঝতে পেরেছিলাম বলেই তার যাতে পরদিন সকালে উঠে কম খারাপ লাগে, আমি সেই রাতেই তাকে একটা ই-মেইল করি, যাতে পরিস্থিতি হালকা করার জন্য লিখি, আমাকে গালাগাল করার শাস্তি হিসেবে মাসখানেকের মধ্যেই তাকে কিন্তু সম্পূর্ণ পরিবারসহ আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসতেই হবে। আর সেই সঙ্গে তাকে কথা দিলাম, তার পথ্য প্রসঙ্গে ডাক্তারের সঙ্গে তার সামনেই আলোচনা করা হবে, বিস্তৃতভাবে। ভুল আমার হতেই পারে। আমি তো সত্যি সত্যি ডাক্তার নই! সাধারণ জ্ঞান ও পুষ্টি সম্পর্কে সামান্য পড়াশোনাকে ভিত্তি করে পরামর্শ দিয়েছিলাম। যদি তা-ই হয়, অর্থাৎ আমি ভুল প্রমাণিত হই, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইব।
ভেবেছিলাম, আমার চিঠি পড়লে ঘুম থেকে উঠে তার অপরাধবোধ হবে না বা কিছুটা কম হবে। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে সে আমার ই-মেইল পড়ার আগেই আমাকে ফোন করে। খুব ভোরে। ফোন করে তার অনুতপ্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করে। বলে, 'একজন মৃত্যুপথযাত্রী মানুষের ওপর রাগ করে আর কী করবেন?'
আমিও তাকে প্রায় আগের রাতের তার মতো করেই জোরে ধমক দিয়ে এ ধরনের বাজে কথা আর কখনো না বলার জন্য পরামর্শ দিই। পরে ডাক্তারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা ও পরামর্শ চাইলে, কী আশ্চর্য, ডাক্তার ভিচ আমি যা বলেছিলাম, হুবহু তা-ই বললেন। আমি একটু শঙ্কিত যে ছিলাম না, তা নয়। অক্ষরে অক্ষরে একই কথা বলবেন ডাক্তার ভিচ, এটা আশা করিনি। এরপর হুমায়ূন আরেকবার অনুশোচনা করে। তার এ আচরণ থেকে এটা স্পষ্ট হয় আমার কাছে যে হুমায়ূন অত্যন্ত আবেগপ্রবণ, তাৎক্ষণিক এবং অতি স্পষ্ট ও খোলামেলা তার কথাবার্তায়, আচরণে। কোনো ভণিতা, আড়াল-আবডালের ব্যাপার ছিল না তার মধ্যে। এটা আমার কাছে হুমায়ূনের বড় শক্তি ও মানবিক গুণ বলে মনে হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত বন্ধুবৎসল ছিল হুমায়ূন, যদিও ঘনিষ্ঠজনের সংখ্যা ইচ্ছা করেই সীমিত রাখত সে।
কিন্তু একবার বন্ধু বলে যাদের কাছে টেনেছে, তাদের সুখে-দুঃখে সর্বদাই নিজেকে জড়িয়ে রাখতে ভালোবাসত হুমায়ূন। আত্মীয়-অনাত্মীয়ের পার্থক্য, আমার মতোই, তাকেও করতে দেখিনি। আত্মার সহচর যে, সে-ই তো আত্মীয়- রক্ত বা বিবাহের সূত্রে সে সম্পর্কিত না হলেই বা কি?
হুমায়ূনের সঙ্গে তার জীবনের শেষ বেলায় কাকতালীয়ভাবেই আমার ও জ্যোতির বেশ হৃদ্যতা গড়ে উঠেছিল। বয়স তো আর কম হলো না! এ জীবনে বহু জায়গায় থেকেছি, বহু রকম মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। ফলে জীবনে এটাই প্রথম অভিজ্ঞতা নয়, যা থেকে জেনেছি, বুঝেছি, টের পেয়েছি, সম্পর্কের নমুনা বা ঘনিষ্ঠতার তীব্রতা সময়ের পরিমাপে নির্ণিত হয় না। কোনো কোনো ব্যক্তি বা বিশেষ একটি সময় হঠাৎ করে এসে সব কিছু ছাপিয়ে, ভাসিয়ে দিয়ে, পুরো চেনা জগৎটা উল্টাপাল্টা করে ফেলে; হঠাৎ করে সবার চেয়ে কাছের, অথবা সবচেয়ে প্রিয় হয়ে পড়তে পারে। আবার তার ঠিক উল্টোটাও ঘটার আশঙ্কাও থাকে, একই সঙ্গে।
হুমায়ূনের এই কঠিন ও শেষ জীবনযুদ্ধে পালা করে রাতের পর রাত জেগে তার শুশ্রুষা বা সেবা করা কিংবা মধ্যরাতে হঠাৎ তার ইলিশ মাছের ভাজা দিয়ে পাতলা খিচুড়ি খাওয়ার শখ মেটানো, কিংবা কথা নেই, বার্তা নেই হঠাৎ করেই তার ইচ্ছা ম্যানহাটানের সাউথ সিটি সিপোর্টের রেস্টুরেন্টে গিয়ে সি-ফুড খাওয়া, কিংবা ঘুম থেকে উঠেই উদ্ভট শখ, তক্ষুণি আটলান্টিক সিটিতে ছোটা, হাসিমুখে এসব কিছুরই ব্যবস্থা করেছে তার স্ত্রী, আমার কন্যার বয়সী শাওন, আর হুমায়ূনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ নিকটজন তার স্নেহধন্য মাযহার। আমরা সেসব কিছুই করতে পারিনি। তবু এটা সত্য, ডাক্তারদের সঙ্গে কথাবার্তা, আলোচনার জন্য আমাকে যখন হুমায়ূন ও তার স্ত্রী উভয়েই বেছে নিল, যখন শাওন ডাক্তারের কাছে আমাকে হুমায়ূনের বোন বলে পরিচয় করিয়ে দিল, তখন ধীরে ধীরে হুমায়ূনও যেন আমাকে বোনের মর্যাদা দিতে শুরু করল। আর সেই জন্যেই বোধহয় সম্পূর্ণ যন্ত্রনির্ভর হুমায়ূনকে যেদিন কাচের দেয়াল দিয়ে বাইরে থেকে দেখলাম, সে নাকমুখের সব টিউব ও নলগুলোকে দুহাত দিয়ে খুলে ফেলার চেষ্টা করছে, অথচ ঘরে বা কাছাকাছি সে মুহূর্তে কোনো ডাক্তার বা নার্স নেই, আমি দ্রুত গায়ে একটি এপ্রোন চাপিয়ে তার আইসিইউর ঘরে ঢুকে হুমায়ূনকে ভাই বলে সম্বোধন করে অনুনয় করি, ওগুলো না খোলার জন্যে। সে তখন পূর্ণ সচেতন ছিল। চোখ খোলা। সকালেই ডাক্তার বলে গেছেন, তার প্রত্যাশা অনুযায়ী টিউবগুলো সেদিনই যে খোলার কথা ছিল, তা হবে না। শুধু তাই নয়, আগামী দু দিনেও তা ঘটার সম্ভাবনা কম। দিনের পর দিন কথা না বলে, এভাবে মুখে-নাকে টিউব দিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকার মানুষ হুমায়ূন নয়। কিন্তু তবু আমার কথা সে মেনেছিল সেদিন। শূন্যে উত্থিত তার সচল হাত দুটি প্রায় তৎক্ষণাৎ থেমে গিয়েছিল। টিউব, নল, আইভি ক্যাথেটার খুলে ফেলার চেষ্টা নিয়ন্ত্রণ করেছিল সে হাত দুটি শরীরের দুপাশে বিছানায় আস্তে নামিয়ে নিয়ে এসে।
হুমায়ূন ও তার পরিবার যখন ডেনভার এসেছিল, তাদের এটেস পার্ক, রকি মাউন্টেইন ন্যাশনাল পার্ক ও বিখ্যাত ভয়ের ছবি Shining-খ্যাত স্ট্যানলি হোটেল দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম আমরা। একসঙ্গে সকলে মজা করে যাব বলে নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন দুটি গাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে একটি ভ্যান ভাড়া করেছিলাম। আসা-যাওয়ার সম্পূর্ণ পথ জ্যোতি একাই ভ্যানটা চালিয়েছিল। রাস্তায় গাড়িতে বাজতে থাকা জন ডেনভারের 'রকি মাউন্টেইন হাই' গানের সঙ্গে গলা মিলিয়ে হুমায়ূন ও শাওন প্রায়ই জোরে জোরে গেয়ে উঠছিল 'রকি মাউন্টেইন হাই'। ওদের আনন্দ-উচ্ছলতায় ভরা সেই রকি মাউন্টেইন হাই গান আজও কানে বাজে স্পষ্ট। আমি, জ্যোতি, হুমায়ূন-শাওন ছাড়াও গাড়িতে ছিল ওদের পুত্রদ্বয়- নিষাদ ও নিনিত, শাওনের ছোট বোন সেঁজুতি ও মা সংসদ সদস্য তহুরা আলী। গাড়ি চলছে অনেক উঁচুতে পর্বতের আঁকাবাঁকা পথ ধরে। যেতে যেতে কখনো কখনো আমরা কথা থামিয়ে জন ডেনভারের গলায় তাঁর অন্যান্য বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গানগুলো, যেমন, 'Annie’s Song’. ‘Country Road, Take me Home :’, ‘Sunshine on my shoulder makes me happy' মন দিয়ে শুনছি। কখনো কখনো সেঁজুতির শখ মেটাতে গাড়ি থামিয়ে তাকে ফটো তোলার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
ফেরার পথে রাত হয়ে গিয়েছিল। সন্ধ্যায় রকির সৌন্দর্যের বর্ণনা হুমায়ূনের চেয়ে সুন্দর করে বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। হুমায়ূন লিখেছে, 'সন্ধ্যাবেলা আকাশে প্রকাণ্ড চাঁদ উঠল। চাঁদের আলো বরফে পড়ে বরফ হয়ে গেল হীরকখণ্ড। আলো বিকিরণ করা শুরু করল। চাঁদের আলো এমনিতেই ঠাণ্ডা। বরফ থেকে প্রতিফলিত হয়ে তা হয়ে গেল আরো কোমল। অলৌকিক এক দৃশ্যের অবতারণা হলো। সে দৃশ্যের সঙ্গে সচরাচর দেখা পৃথিবীর কোনো দৃশ্যের মিল নেই' (পায়ের তলায় খরম, পৃষ্ঠা ৮৩)।
আমার মাঝেমধ্যেই মনে হয়, জীবন বোধহয় দেখতে অনেকটাই পৃথিবীর মতো। পৃথিবীর আকারের মতোই জীবনের অভিজ্ঞতাঠাঁসা চেপ্টা আকৃতির কমলালেবুটি বোধহয় সততই গোল, যা গড়াতে গড়াতে বহুদূর পর্যন্ত গেলেও আবার ঠেলেঠুলে ঘুরেটুরে ফিরে আসে স্বস্থানে। আর তাই রকি মাউন্টেইনের ওপর চাঁদের আলো দেখে বরাবর জ্যোৎস্না-কাতর ও জ্যোৎস্নার আলোতে বিমুগ্ধ হুমায়ূন আহমেদের পরিপূর্ণ কবিসত্তা আগের মতোই হঠাৎ জেগে ওঠে :
'এমন চাঁদের আলো
মরি যদি তাও ভালো
সে মরণও স্বর্গ সমান।'
তার অন্যতম প্রধান ভালোলাগা, জ্যোৎস্না রাতে পর্বতশিখরে পরিবার ও বন্ধু পরিবৃত্ত হয়ে হুমায়ূন স্বভাবগতভাবে জীবনের গান, আনন্দের সংগীত রচনা করবে, এটাই ছিল স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। কিন্তু জ্যোৎস্নাপ্লাবিত এমন এক অসাধারণ রাতে মৃত্যু বা স্বর্গের কথা কেন মনে হলো তার? চাঁদের আলোর মতো প্রিয় বস্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যু ও স্বর্গের সমান হয়ে গেল? এ যেন রবীন্দ্রনাথের 'মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান।' হুমায়ূন কি সে রাতেই কিছু টের পেয়েছিল, যা আমরা প্রিয়জনেরা আশেপাশে থেকেও কিছুই বুঝতে পারিনি?
0 Comments