আমার রবীন্দ্রনাথ - শক্তি চট্টোপাধ্যায়
পঞ্চাশ-ষাটের দশকের অন্য আর পাঁচ জন কবির মতোই রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়েরও একটা গ্রহণ-বর্জনের সম্পর্ক ছিল। সমালোচনার জন্য যে বইটি হাতে তুলে নিয়েছি, তার ব্লার্বে প্রকাশক লিখছেন সে সম্পর্ক, ‘লুকোচুরি খেলা’- সম্পর্ক। যা কবি, ‘পরবর্তীকালে স্বীকার করেছিলেন’। কেন না, এ তো, ‘অগ্রজের কাছে অনুজের নিঃশর্ত আত্মসমর্পন’। অথবা, শক্তির নিজের কথায় যাকে বলেছেন, ‘উনি এসেই পড়েন, উপায় নেই’।
শক্তির কবিতার ভুবনে যে রবীন্দ্র অনুভব, বা অসংখ্য কবিতার পংক্তিতে পংক্তিতে শক্তির যে নিজের রবীন্দ্রনাথ সেই লেখার সংকলন এ বই নয়। এ বই আসলে রবীন্দ্রনাথকে বিষয় করে শক্তির লেখা গদ্য- পদ্য ও সাক্ষাৎকারের সংকলন। ভূমিকা লিখেছেন, কবি জায়া মীনাক্ষী চট্টোপাধ্যায়। মীনাক্ষীদেবী লিখছেন, ‘এতদিন সাধারণ্যে শক্তির রবীন্দ্রবিরূপতার কথাই প্রচলিত, বিনম্র শ্রদ্ধাটি নয়, সেগুলি পূর্ণ প্রকাশিত কবিতা বা কবিতাংশের মধ্যে’।
কয়েকটি কবিতা এ সংকলনে থাকলেও, শক্তির অজস্র কবিতায় রবীন্দ্রনাথ রয়েছেন। যা ধরা নেই এ সংকলনে। সেদিক থেকে খানিকটা হলেও সমগ্রতা হারালো এ গ্রন্থের উদ্দেশ্য।
যে গদ্যগুলি সংকলিত হয়েছে এই গ্রন্থে, সেগুলি হল ‘পঁচিশে বৈশাখ’, ‘কবিতা দিবস’, বাইশে শ্রাবণ’, ‘রবীন্দ্রনাথ; আমার মত করে’, ‘আমার প্রিয় রবীন্দ্রকবিতা’।
এর কয়েকটি ১৯৬৪ সালে কলকাতার কয়েকটি জায়গা ও ঘটনা নিয়ে ‘দেশ’ ও ‘অমৃত’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। যা পরে শক্তির বই ‘রূপকথার কলকাতা’ নামে প্রকাশিতও হয়। এই লেখাগুলিতে কবি শক্তির রবীন্দ্র-অনুভব ধরা পড়েছে শব্দ ব্যবহারের নিমগ্নতায়।‘বাংলাদেশ ও রবীন্দ্রনাথ- এটাকে পৃথক করা যায় না’ শীর্ষক সাক্ষাৎকারে কবির সুগভীর বিশ্লেষণে অন্য এক রবীন্দ্রনাথকে পায় পাঠক। এ সংকলনের শেষ পর্বে প্রকাশক সাজিয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথকে নিবেদিত শক্তির কবিতা। যার প্রতি পরতে পাঠককে চমকে উঠতে হয়, কবিতা পংক্তির দ্যুতিতে। মনে হয়, কেন লিখেছিলেন শক্তির নিজের কথায় ‘উনি এসেই পড়েন, উপায় নেই’।
Download
Amar Rabindranath - Shakti Chattopadhyay in pdf