মানুষজন যেন ভুলেই গিয়েছেন সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ভুলে গিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ইতিহাসের ছাত্রটি ছিল আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জসীমউদ্দীন এবং মোহিতলাল মজুমদারের ছাত্র। শুধু পড়াশোনা নয়, তিনি জড়িয়ে ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামেও। বিপ্লবী দীনেশ গুপ্তের পার্শ্বচর হিসেবে তাঁকে তখন ঢাকার অনেকে চিনতেন। শুধু কি তাই! ঢাকা ছেড়ে ১৯৪১ সালে কলকাতায় পালিয়ে আসার পিছনেও ছিল সেই বিপ্লবী কার্যকলাপ। এক পুলিশের চরকে খুনের মামলায় জড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর নাম।
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। মেধাবী। তাঁর কমেডির পিছনে কী প্রবল মেধা কাজ করেছিল সেই প্রমাণ রয়েছে ওই লেখালিখিতে। শুধু অভিনয় নয়, তিনি চারপাশের সমাজকেও গভীর ভাবে চিনতেন। অভিনেতারা তো সমাজ বিচ্ছিন্ন নন। বরং বড় অভিনেতারা সমাজকে কাটাছেঁড়া করে খুঁজে নেন অভিনয়ের নির্যাস। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিয়েছেন। তাই জহর রায় প্রসঙ্গে তিনি বলতে পারেন, “আমার বেলায় বাঙাল ভাষায় কথা বলানোটা অনেকেই চান। বাঙাল কথা বললেই যদি কমিক হত, তবে যে কোনও পূর্ববঙ্গের লোক দিয়েই কমিক করানো যেত। বাঙাল ভাষায় কথা বলার কারণ আমার ভিন্ন। ঢাকা থেকে কলকাতায় এসে অভিনয় করতে চাইলে অনেকে বলেছেন, ‘এখনও জিভে আড় ভাঙেনি, অভিনয় করবেন কী?’ আমিও বলেছি, ‘জিভে আড় তো কোনওদিন ভাঙবে না, সুতরাং পরিষ্কার ভাষা আমি কোনওদিন বলব না।’ তাই অনেকগুলো ছবিতে আমাকে বাঙাল ভাষায় ও জহরকে দু’-একটি ছবিতে এ দেশীয় ভাষায় কথা বলে অভিনয় করতে হয়েছে। অথচ জহরও পূর্ববঙ্গের লোক, ওর বাবা-মা পূর্ববঙ্গের ভাষায় কথা বলেন।” আবার, ‘আমাদের সংস্কৃতি কোন পথে’ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাঁর মনে হয়েছে, “আমাদের দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে একটা বাধা হিসেবে কাজ করে। ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির ফলে সাধারণ মানুষ দিন দিন দারিদ্রের দিকে এগিয়ে চলেছে। অপর দিকে যারা ধনী তারা আরও ধনী হচ্ছে। আমাদের দেশের এই ধনীরাই সমস্ত কিছুর নির্ধারক হয়ে বসে আছে। তারা শুধুমাত্র টাকার লোভে দেশের সিনেমা-নাটকের মান নামিয়ে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের যুব সমাজের নীতি-নৈতিকতার মান যাতে না গড়ে উঠতে পারে তার জন্য তারা অনবরত এই কু-সংস্কৃতির প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।”
Lekhalekhi - Bhanu Bandopadhyay in pdf
বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক! সাধ্যের মধ্যে থাকলে বইটি কিনবেন এই প্রত্যাশা রইলো।
0 Comments