Ticker

6/recent/ticker-posts

গান্ধীবাদের স্বরূপ - সুপ্রকাশ রায়

Gandhibader Swarup A critical Analysis of Gandhism by Suprakash Royগান্ধীবাদের স্বরূপ - সুপ্রকাশ রায়
“আমি সর্বপ্রথম হিন্দু, তারপর দেশপ্রেমিক।”
“সংগ্রামের মাধ্যমে নহে, ভগবানের আশীবাদরূপেই এই স্বরাজ স্বগ হইতে ভারতের উপর নামিয়া আসিবে।”
গান্ধীর অহিংস বাণী। গান্ধী তার সমগ্র জীবনে রেখে গেছেন এমনই শত শত বাণী। সেই বাণীময় উল্লাসে উদ্বেলিত-উত্তাল হয়েছিল ভারতবর্ষ বিশের দশক থেকে চল্লিশের দশক পর্যন্ত স্বরাজ স্বগের আকাঙক্ষায়। কিন্তু নির্দিষ্ট কার্যক্রমের ধারাপ্রবাহে গান্ধী দেশবাসীকে উপহার দিয়েছিলেন ত্রি-খণ্ডিত বাস্তব স্বরাজ-স্বৰ্গ—হিন্দু-মুসলিম হাঙ্গামায় সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক স্বৰ্গ-রাজ্য— যা সাম্রাজ্যবাদ-সামন্ততন্ত্রের চিরাচরিত আকাঙক্ষাকেই বাস্তবায়িত করেছে। গান্ধী এই ফেনোমেনোনটি সম্মর্কে মূল্যায়ণ সমাজ-বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময় করেছেন – কখনও পাটিগতভাবে, কখনও পার্টির বাইরে থেকে — ‘গান্ধীবাদের স্বরূপ’ গ্রন্থটি তাদের মূল্যায়ণকে আরও সমৃদ্ধ করবে আশা রাখি।
গান্ধী ছিলেন অনন্যসাধারণ গুণের অধিকারী। অতি সহজেই তিনি জনগণের সঙ্গে মিশতে পারতেন। এই গুণের দ্বারাই তিনি হয়ে উঠেছিলেন জনগণের নেতা। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে গান্ধীর সংগ্রামের অছিলা ছিল বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের নিষ্পেষণে পিষ্ট জুলু উপজাতীয় কৃষক-সম্প্রদায়ের সংগ্রাম হতে বুদ্ধিজীবীদের তথা সমগ্র বিশ্বের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেয়া। এতেই বৃটিশ বুঝে গিয়েছিল – ‘মোল্লা যতই দৌড়ক, মসজিদ ছাড়া কোথাও যাবে না’ তাই সঠিকভাবেই তাকে ভারতে প্রেরণ করে শ্রমিক-কৃষকের স্বাধীকার সংগ্রাম দমন করার জন্য।
১৯১৫ সালে ভারতে পা দিয়ে গান্ধী প্রথমেই সুযোগ পেয়ে গেলেন বিহারের চম্পারণ জেলার ইওরোপীয় নীলকরদের বিরুদ্ধে কৃষকদের নীল-বিদ্রোহকে – কিছু কনসেশন পাইয়ে দিয়ে গান্ধী তা দমন করেন। ১৯১৮ সালে আমেদাবাদের শ্রমিকদের জঙ্গী আন্দোলনকেও তিনি শ্রেণী-সমঝোতার খাদে বইয়ে দিয়েছিলেন। এইভাবে একের পর এক শ্রমিক-কৃষকের সংগ্রামের বিরোধীতা করে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ, ভারতীয় বৃহৎ বুজোয়া-জমিদার-সামন্তপ্রভুদের মহান দাশনিক সেনানায়ক’ হয়ে গান্ধী বাপুজীতে পরিণত হয়েছিলেন।

Download
Gandhibader Swarup A critical Analysis of Gandhism by Suprakash Roy