Ticker

6/recent/ticker-posts

মধ্যরাতের অশ্বারোহী - ফয়েজ আহ্‌মদ

মধ্যরাতের অশ্বারোহী - ফয়েজ আহ্‌মদ মধ্যরাতের অশ্বারোহী - ফয়েজ আহ্‌মদ

পঞ্চাশের দশকের গোড়ায় ফয়েজ আহ্‌মদের সাংবাদিক জীবনের শুরু। ঢাকা তখন এক জায়মান প্রাদেশিক শহর, মহানগরীর ব্যাপ্তি অর্জন করে নি বটে, তবে একেবারে নিস্তরঙ্গ নয়। পূর্ব বাংলার জনজীবনে ঘটে চলেছিল রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা পরিবর্তন, ছোট ছোট যেসব ঘটনার তাৎপর্য ছিল সুদূরপ্রসারী। দেশভাগ পরবর্তী এইসব বাস্তবতার সাক্ষী মধ্যরাতের এক অশ্বারোহী, দৈনিক পত্রিকার তরুণ ও উদ্যোগী সংবাদকর্মী, পত্রিকার শেষ মুহূর্তের সকল কাজ শেষে নির্জন রাতে যিনি শহরের রাস্তা দিয়ে ফেরেন ডেরায় আর ঝুলিতে জমা হতে থাকে দৈনন্দিন তাজা আড়ালের অনেক অবলোকন ও অভিজ্ঞতা। অনেক বছর পর, অননুকরণীয় এক গদ্যভাষায়, বৈঠকী মেজাজে, সহজিয়া গল্পকথার ভঙ্গিতে জীবনের সেইসব নিবিড় উপলব্ধির কথা মেলে ধরলেন এই প্রথিতযশা সাংবাদিক, বামপন্থায় সমর্পিত উদ্যোগী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফয়েজ আহ্‌মদ এবং ১৯৮২ সালে প্রকাশিত ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ অচিরেই জয় করলো পাঠকের মন ও ভাবুকজনের হৃদয়। দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনের কর্মধারায় রাজনৈতিক ও সামাজিক অসংখ্য ঘটনা দেখেছেন মঞ্চের একেবারে পাশ থেকে যেমন, তেমনি পর্দার আড়াল থেকেও। এই অভিজ্ঞতার ঝাঁপি তিনি মেলে ধরেছেন সাংবাদিক-সুলভ নৈর্ব্যক্তিকতা থেকে পাঠকচিত্তের আগ্রহ-জাগানিয়া কথনভঙ্গিতে। আসর-মাতানো গল্পের ভাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত লেখক রপ্ত করেছেন উপযুক্ত রচনা দক্ষতা, গুরুগম্ভীর বিশ্লেষকের ছদ্মাবরণ বর্জন করেছেন সম্পূর্ণভাবে। বিভিন্ন গল্পকথার সূ্ত্রে তিনি পরিবর্তনমান সময়, সমাজ, রাষ্ট্র ও বিশ্ব সম্পর্কে যে গভীর উপলব্ধি ও ভাবনাসঞ্চারী বোধের ছাপ রেখে যান তা ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’-কে করে তুলেছে অনন্য। একই সঙ্গে রসসঞ্চারী ও সমাজ-ভাবনার পরিচয়বহ এই গ্রন্থ আমাদের কালের এক শ্রেষ্ঠ সম্পদ হিসেবেই চিহ্নিত হওয়ার দাবিদার।