যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ -- শংকর
Shared By: Sisir Suvro
ছোটবেলায় যিনি আমার হাতে-খড়ি দিয়েছিলেন র্তার কথাই মনে পড়ছে। সরস্বতীর দপ্তরখানায় যদি পুরনো হিসেবের কাগজ-পত্র যথাযথভাবে রক্ষা করবার ব্যবস্থা থাকে তবে সেখানকার লেজারে আমার নামের পাশে আজও নিশ্চয় লেখা আছে—ইনট্রোডিউসড, বাই যোগেন্দ্রনাথ মান্না। বুদ্ধ মানুষটি-সারাক্ষণ নিজের মনে পান চিবোতেন। বয়সের টানে দেহের চামড়া আর টান-টান ছিল না—কিন্তু মাথার চুলগুলো দেহের কালোরঙের সঙ্গে খাপ খাবার জন্যেই যেন তখনও কালো ছিল। বাড়ির আর সবাই বলতেন মুহুরমশায়, আর আমার বাবা (তিনি উকিল ছিলেন ) ডাকতেন যোগীন। আমাদের বাড়িতেই থাকতেন তিনি ; আর সারাক্ষণ লাল খেরোবাধানো খাতায় কি সব লিখতেন। র্তার মুক্তোর মতো হাতের লেখার দিকে তাকিয়ে ভাবতাম আমিও কবে আমনভাবে লিখতে পারবো f অন্য সবার সঙ্গে আমিও প্রথমে তাকে মুহুরীমশায় বলেই ডাকতাম । তারপর একদিন মা বললেন, “এখন থেকে ওঁকে মাস্টারমশায় বলে ডাকবে । প্ৰণাম করো ওঁকে ৷” মাস্টারমশায় হা হা করে উঠলেন। “আ-হা-হা তা কখনই হয় না।’ বাউনের ছেলে পায়ে হাত দেবে কি ” মা বললেন, “হবে না কেন , আপনি না ওর হাতে-খড়ি দিচ্ছেন—ওর গুরুদেব । সেকাল হলে আপনার বাড়িতে গিয়ে, আপনার সেবা করে লেখাপড়া শিখতে হতো।” বিত্রত মাস্টারমশাই উত্তর দিয়েছিলেন, “কী যে বলেন।” এরপর মা ও মাস্টারমশায় আর ও প্রসঙ্গের অবতারণা করেননি। কিন্তু আমার প্রস্তাবটা মন্দ লাগেনি ।
Download and Comments/Join our Facebook Group