জীবনানন্দ রচনা করেছেন প্রায় ১৬০০ কবিতা, এক ডজন উপন্যাস, প্রায় পঞ্চাশটি গল্প ও বহু প্রবন্ধ। তিরিশের দশক থেকে মৃত্যুবধি তিনি গল্প-উপন্যাস রচনা করে গিয়েছেন, কিন্তু সেগুলির একটিও তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশিত হয়নি। তাঁর কবিতারও এক ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ গ্রন্থিত হয় তাঁর জীবদ্দশায়, যদিও আরও কয়েকশো কবিতা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়-অধিকাংশই বিভিন্ন লিট্ল ম্যাগাজিনে।
"মাল্যবান" তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস যা গ্রন্থিত হয় ১৯৭০ সালে। বাস্তবিকই, তাঁর অকালমৃত্যুর পরে কা্রোর ধারণাই ছিল না যে তাঁর পাণ্ডুলিপির ট্রাঙ্কের ভিতর এতগুলি অপ্রকাশিত গল্প ও উপন্যাস রয়েছে।
জীবনানন্দ মনে করতেন যে সমাজ ও অর্থনীতির সমস্যায় বহু মানুষের জীবন চিরকাল চক্করে ঘুরে চলেছে। এই সব পরিস্থিতি নিয়ে তিনি যে উপন্যাস লিখেছেন তার কাঠামো সাধারণ উপন্যাসের থেকে আলাদা-এই উপন্যাসের শুরুও নেই, শেষও নেই। তাঁর দু-একজন সাহিত্যিক বন্ধু দু-একটি উপন্যাস পড়ে বলেন যে এই উপন্যাস লেখার ব্যাকরণ মানছে না, তাই এগুলি চলবে না। তাই জীবনানন্দ নিজেও এগুলিকে ঘষা-মাজা করে প্রকাশ করার চেষ্টা করেননি।
তাঁর নিজের কিন্তু বিশ্বাস ছিল যে মানুষের আসল সমস্যাকে পাঠকের কাছে তুলে ধরতে এরকম উপন্যাসের প্রয়োজন আছে-তাই বিশ বছরের বেশি সময়ে কয়েক ডজন খাতা ভর্তি করে এতো গল্প-উপন্যাস লিখেছেন তিনি। তিনি এও জানতেন যে ইউরোপের কিছু নামী লেখক এই ধরণের উপন্যাস লিখেছেন- যদিও জীবনানন্দের সব উপন্যাসই একান্তভাবে বাঙালীর জীবনসংকট নিয়ে।
আশা করি পাঠকেরা-এই বইটি পড়ে উপভোগ করবেন।
উপন্যাস সমগ্র