বিবিধার্থ - সংগ্রহ - খন্ড ৩
ছোটোবেলায় রবীন্দ্রনাথকে এমন কিছু বাংলা পত্র-পত্রিকা তাঁর হাতে পড়ে যাতে তাঁর মনের খোরাক তিনি পেয়েছিলেন। এদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিবিধার্থসংগ্রহ ও অবোধবন্ধু! রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সচিত্র বিবিধার্থসংগ্রহ-এর (১২৫৮-১২৬৪) বাঁধানো একভাগ হেমেন্দ্রনাথের আলমারি থেকে পেয়েছিলেন। সেই বড়ো বইটিকে বুকের ওপর নিয়ে চিত হয়ে নর্হাল তিমি মৎস্যের বিবরণ, কাজির বিচারের কৌতুকজনক গল্প, কৃষ্ণকুমারী উপন্যাস পড়তে পড়তে ছুটির দিনের অলস দুপুরগুলি কাটত। তেমনি, দ্বিজেন্দ্রনাথের আলমারি থেকে পাওয়া অবোধবন্ধু পত্রিকায় (১৮৬৩, বৈশাখ ১২৭০) কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্যের ফরাসি থেকে অনূদিত বার্ণাদ্যাঁ দে স্যাঁত পিয়ের (১৭৩৭-১৮১৪) রচিত Paul et Vergine-(১৭৮৭)-র করুণকাহিনি রবীন্দ্রনাথের মনে বিশেষ ছাপ ফেলেছিল। বিশেষ করে প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে-ওঠা এই রোম্যান্স-কাহিনি পড়ে বনফুল কাব্যের কবিকে কিছুটা যে প্রভাবিত করেছিল তাতে সন্দেহ নেই। এই পত্রিকাতেই বিহারীলাল চক্রবর্তীর কাব্যের সঙ্গে তিনি পরিচিত হন। বিহারীলালের কাব্যভাষার ছবি, ধবনি ও ছন্দের রোল তাঁকে যে বহুদিন পর্যন্ত 'বিহারীবাবুর মতো কাব্য লিখিব' এই প্রতিজ্ঞায় স্থির রেখেছিল সে কথা সকলেরই জানা। জীবনানন্দের কোনো কোনো কবিতায় প্রকৃতির যে জাতীয় স্বাদ আমরা পাই, অসংখ্য স্মরণীয় ছবির সঙ্গে অনেকটা সেই রকম স্বাদ বালক রবীন্দ্রনাথকে তৃপ্তি দিত : 'ঝরণার ধারে জলশীকরসিক্ত স্নিগ্ধশ্যামল দীর্ঘ কোমল ঘনঘাসের মধ্যে দেহ নিমগ্ন করিয়া নিস্তব্ধভাবে জলকলধবনি শুনিতে পাওয়া'র কল্পনা তাঁকে মুগ্ধ করেছিল।
আজ আমাদের সৌভাগ্য হচ্ছেই সেই পত্রিকাটি পড়ার যার নাম; "বিবিধার্থসংগ্রহ"
ছোটোবেলায় রবীন্দ্রনাথকে এমন কিছু বাংলা পত্র-পত্রিকা তাঁর হাতে পড়ে যাতে তাঁর মনের খোরাক তিনি পেয়েছিলেন। এদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিবিধার্থসংগ্রহ ও অবোধবন্ধু! রাজেন্দ্রলাল মিত্রের সচিত্র বিবিধার্থসংগ্রহ-এর (১২৫৮-১২৬৪) বাঁধানো একভাগ হেমেন্দ্রনাথের আলমারি থেকে পেয়েছিলেন। সেই বড়ো বইটিকে বুকের ওপর নিয়ে চিত হয়ে নর্হাল তিমি মৎস্যের বিবরণ, কাজির বিচারের কৌতুকজনক গল্প, কৃষ্ণকুমারী উপন্যাস পড়তে পড়তে ছুটির দিনের অলস দুপুরগুলি কাটত। তেমনি, দ্বিজেন্দ্রনাথের আলমারি থেকে পাওয়া অবোধবন্ধু পত্রিকায় (১৮৬৩, বৈশাখ ১২৭০) কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্যের ফরাসি থেকে অনূদিত বার্ণাদ্যাঁ দে স্যাঁত পিয়ের (১৭৩৭-১৮১৪) রচিত Paul et Vergine-(১৭৮৭)-র করুণকাহিনি রবীন্দ্রনাথের মনে বিশেষ ছাপ ফেলেছিল। বিশেষ করে প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে-ওঠা এই রোম্যান্স-কাহিনি পড়ে বনফুল কাব্যের কবিকে কিছুটা যে প্রভাবিত করেছিল তাতে সন্দেহ নেই। এই পত্রিকাতেই বিহারীলাল চক্রবর্তীর কাব্যের সঙ্গে তিনি পরিচিত হন। বিহারীলালের কাব্যভাষার ছবি, ধবনি ও ছন্দের রোল তাঁকে যে বহুদিন পর্যন্ত 'বিহারীবাবুর মতো কাব্য লিখিব' এই প্রতিজ্ঞায় স্থির রেখেছিল সে কথা সকলেরই জানা। জীবনানন্দের কোনো কোনো কবিতায় প্রকৃতির যে জাতীয় স্বাদ আমরা পাই, অসংখ্য স্মরণীয় ছবির সঙ্গে অনেকটা সেই রকম স্বাদ বালক রবীন্দ্রনাথকে তৃপ্তি দিত : 'ঝরণার ধারে জলশীকরসিক্ত স্নিগ্ধশ্যামল দীর্ঘ কোমল ঘনঘাসের মধ্যে দেহ নিমগ্ন করিয়া নিস্তব্ধভাবে জলকলধবনি শুনিতে পাওয়া'র কল্পনা তাঁকে মুগ্ধ করেছিল।
আজ আমাদের সৌভাগ্য হচ্ছেই সেই পত্রিকাটি পড়ার যার নাম; "বিবিধার্থসংগ্রহ"