Ticker

6/recent/ticker-posts

গল্পসমগ্র মিলান কুন্দেরা (উৎপল ভট্টাচার্য সম্পাদিত)

গল্পসমগ্র মিলান কুন্দেরা (উৎপল ভট্টাচার্য সম্পাদিত)
গল্পসমগ্র মিলান কুন্দেরা (উৎপল ভট্টাচার্য সম্পাদিত)
১৯২৯ সালে চেকোশ্লোভাকিয়ার নাে শহরে মিলান কুন্দেরার জন্ম। বাবা লুদভিক কুন্দেরা আর মা মিলাদা জানিসকোভা। পড়াশােনা, বড় হয়ে ওঠা সবই ব্রুনােতে। পরে প্রাগের শার্ল বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা বিভাগে সাহিত্য ও নন্দনতত্ত্ব নিয়ে পড়াশােনা করেন। ১৯৫০-এ রাজনৈতিক আগ্রাসনের কারণে তার পড়াশােনা সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়। স্নাতক হবার র ১৯৫২-তে সেখানকার চলচ্চিত্র বিভাগ কুন্দেরাকে বিশ্বসাহিত্যের লেকচারার নিযুক্ত করে। স্কুলে পড়ার সময়ে কুন্দেরার কবিতা লেখার শুরু। ১৯৫৩-১৯৫৭-এর মধ্যে তিন খণ্ডে প্রকাশিত হয় কাব্যগ্রন্থ। এরপর শুরু হয় গল্প ও উপন্যাস লেখার প্রস্তুতি। ১৯৬৭-তে প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস ‘দ্য জোক'। ১৯৬৭-এর সেপ্টেম্বর মাসে ভেরা হাব্রানকোভার সঙ্গে বিয়ে হয় কুন্দেরার। ‘লাফেল লাভ’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৯-এ। ১৯৬৮-তে রুশ আগ্রাসনের পর প্রায় ৪০০ জন লেখক শিল্পীকে নিষিদ্ধ ঘােষণা করা হয়, তাদের একজন ছিলেন মিলান কুন্দেরা। ১৯৭০-এ পার্টির সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে। চাকরি থেকেও বরখাস্ত হন কুন্দেরা। সমস্ত রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারগুলােতে নিষিদ্ধ করা হয় কুন্দেরার বইপত্র। এর আগে, তরুণ বয়সে চেকের কম্যুনিস্ট পার্টিতে যােগ দিয়েছিলেন মিলান কুন্দেরা। ১৯৫০-এ দলবিরােধী কাজের জন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৫৬ সালে তাকে আবার পার্টিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়বার সেরকম কিছু আর ঘটেনি।
১৯৭৫-এ সামান্য অর্থ সম্বল করে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন ফ্রান্সে। কুন্দেরার তখন ৪৬ বছর বয়স। ফ্রান্সে শুরু হয় তার নতুন জীবন। নতুন লেখালিখি। ১৯৭৫-১৯৭৯ পর্যন্ত রেনে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮০-তে প্যারিসে অধ্যাপনার কাজে যুক্ত হন। কুন্দেরা ফরাসি নাগরিকত্ব পান ১৯৮১ সালে। তারও আগে সবচেয়ে বেশি পঠিত শ্রেষ্ঠ বিদেশি উপন্যাস Life is elswhere-এর জন্য ফ্রান্সের Prix Medicis সম্মান লাভ করেন ১৯৭৩-এ। জেরুজালেম পুরস্কার (১৯৮৫) সহ আরও কুড়িটি পুরস্কারবিজয়ী কুন্দেরা শুরুতে লিখতেন চেক ভাষায়। দেশত্যাগ করে ১৯৭৫ সালে ফ্রান্সে চলে আসার পর ফ্রান্সেই বসবাস করছেন—স্বাভাবিকভাবে ফরাসি ভাষায় লেখালিখি শুরু করেন। দুটি ভাষাতেই তিনি সমান পারদশী। দুটি ভাষাতে লিখে প্রভূত খ্যাতি এবং পাঠকপ্রীতি অর্জন করেছেন তিনি। কুন্দেরার ‘ইমমর্টালিটি প্রকাশিত হয় ১৯৯০ সালে। এটাই তার চেক ভাষায় লেখা শেষ উপন্যাস। আর ১৯৯৫-তে প্রকাশিত ‘স্লোনেস’ ফরাসি ভাষায় লেখা কুন্দেরার প্রথম উপন্যাস।
কুন্দেরার উপন্যাসগুলি : ‘দ্য জোক’, ‘দ্য ফেয়ারওয়েল পার্টি’, ‘লাইফ ইজ এলসহােয়্যার’, ‘দ্য বুক অফ লাফটার অ্যান্ড ফরগেটিং’, ‘দ্য আনবিয়ারল লাইটনেস অফ বিয়িং’, ‘ইমমর্টালিটি’, ‘স্লোনেস', ‘আইডেন্টিটি’, ‘ইগনােরেন্স'। টেস্টামেন্ট বিট্রেড’, ‘দ্য আর্ট অফ দি নভেল’, ‘দ্য কার্টেন কুন্দেরার প্রবন্ধগ্রস্থ। নাটকের বই আছে তিনটি। আর গল্পগ্রন্থ একটিই : ‘লাফেবল লাভস।
ফ্রানৎস কাফকার যােগ্য উত্তরসূরি মিলান কুন্দেরার মহাগল্পগ্রন্থ ‘লাফেবল লাভূস’ চেক ভাষায় লেখা। গল্পগুলি লেখা হয় বােহমিয়াতে, ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে। লাফেল লাভস-এর ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৯৭৪-এ, লেখক ওই সংস্করণের পরিমার্জনা করেন ১৯৮৭-তে, অ্যারন অ্যাশ-এর সহযােগে পুনরায় ব্যাপকভাবে পরিমার্জনা করেন ১৯৯৩-তে।
মােট সাতটি গল্প আছে এই গ্রন্থে। গল্পগুলি ভালােবাসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। কৌশল-আশ্রিত ভালােবাসা। যে ভালােবাসা প্রতিনিয়ত অনিশ্চয়তা আর আশঙ্কায় ভরা। গল্পের ভূতগ্রস্ত চরিত্রগুলাে ক্রমশ এগিয়ে যায় অনিবার্য পরিণতির দিকে।
যৌনতা এবং পরকীয়া সম্পর্কের আপাততুচ্ছ ঘটনাকে কুন্দেরা যে দক্ষতায় আমাদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মেলান-তা অভাবনীয়।