কাউকে বড় করার জন্য আমরা অন্যকে ছোট করতে ভালবাসি অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা, সহিঞ্চুতার কোনো বালাই আমাদের নেই। ‘সমালোচনার মর্যাদা’ বস্তুটির নামগন্ধ সমাজের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বির্তক শুরু নব্বই দশকের গোড়ার দিকে। সূত্রপাত হয়েছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। এক মুক্তিযোদ্ধাকে ‘বড়’ করতে জাতিরজনককে খাটো করতে। এই প্রচেষ্টার বিরোধীরা তখন পত্র-পত্রিকায় লেখালিখি, বিবৃতি দিয়ে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। পরবর্তীতে আইন-আদালতের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে চেয়েছেন। তারপরে মুক্তিযুদ্ধে নানাভাবে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন তাঁদের লেখায় এ বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করে সেই বির্তককে উস্কে দিয়েছেন।
এবারের বইমেলায় প্রকাশিত “বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ও প্রাসঙ্গিক বিতর্ক” গ্রন্থে লেখক মোঃ আবদুল জব্বার আবার ঐ সব বক্তব্য খণ্ডনের প্রয়াস পেয়েছেন। বইগুলো হলো মঈদুল হাসানের মূলধারা '৭১, এ কে খন্দকারের ১৯৭১ ভেতর বাইরে, হুমায়ূন আহমেদের জোছনা ও জননীর গল্প, গোলাম মুরশিদের মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর, শারমিন আহমদের তাজউদ্দিন আহমদ - নেতা ও পিতা।
এখানে লেখক এর আগে প্রকাশিত সাড়া জাগানো পাঁচটি বইয়ের বক্তব্যকে ভ্রান্ত প্রমাণের চেষ্টা করেছেন। এ ব্যাপারে লেখক মোঃ আবদুল জব্বার আমাদের ঐতিহ্য মতো কাউকে ‘ছোট’ না করে, তীব্র আক্রমণ না করে, যুক্তি ও তথ্যের মাধ্যমে তাঁর মত প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পেয়েছেন। যা পাঠকের মনোযোগ দাবি ক...
এভাবেও ভিন্নমত প্রকাশ করা যায় তা আমাদের রাজনীতির ‘খিস্তি-খেউড়ে’ মধ্যে কিঞ্চিৎ স্বস্তিদায়ক। গ্রন্থলেখক আদালতের রায়ের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণা বির্তকের অবসানের কথা অনেকবার উল্লেখ করেছেন। যা তাঁর বক্তব্য প্রতিষ্ঠার বারংবার অবতারিত হয়েছে এ বইয়ে। কিন্তু আইন বা আদালতের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কি ইতিহাসের সত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়? এই প্রশ্নটি থেকেই যায়। প্রচ্ছদ করেছেন অশোক কর্মকার, আরো একটু দৃষ্টিনন্দন হতে পারতো। তবু বলছি এবার বইমেলায় অনেক বইয়ের মাঝে এটি একটি মূল্যবান ও বুদ্ধিদীপ্ত বই।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ও প্রাসঙ্গিক বিতর্ক
মোহাম্মদ আবদুল জব্বার
সাহিত্য প্রকাশ
প্রচ্ছদঃ অশোক কর্মকার
৩৫০ টাকা