লগন গান্ধার - দেবেশ রায়
শেয়ালদা মেইনের হুইলারের সামনে সুরঞ্জনা একটু আগেই পৌঁছে যায়—কলকাতায় কোথাও যথাসময়ে পৌঁছুতে হলে হাতে সময় নিয়ে বেরিয়ে, শেষে অনেক সময় বিঘ্নহীন পথ পেরিয়ে আগেভাগেই হাজির হতে হয় যেমন। সুরঞ্জনার একটু দেরি হলে মহাভারত অশুদ্ধ হতো না, আলোকময় আগে এসে গেলে তার জন্যে এখানে, এই হুইলারের সামনেই অপেক্ষা করত, আর তেমন একটু বিশ্রামের মন নিয়েই তো সুরঞ্জনার আশা উচিত ছিল। আগে যখন পৌঁছেই গেছে, সে শেয়ালদা স্টেশনটায় একটু ঘুরপাক খেতেও পারত। তেমন কিছুও না করে একেবারে সরাসরি এসে হুইলারের এই ঘুপচিটার মধ্যে ঢুকে গেল, এমনকি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পত্র-পত্রিকাগুলোর ওপর চোখও বোলাল না। যেন আলোকের সঙ্গে তার আজ এমনই দরকার যে তার অন্য কোনো দিকে মন দেয়ার মতো কোনো অবসর নেই।
অথচ সুরঞ্জনা জানে যে আলোক এলে সে আর তার অস্থিরতার কারণটা আলোককে বলতে পারবে না। এমন হতে পারে, আলোক এসে পড়লে সে আর অস্থির বোধ করবে না। আবার, এমনও তো আজকাল যে-কোনো দিন ঘটে যাচ্ছে যে সে না-পারল আলোককে তার অস্থিরতার কারণ বোঝাতে, অথচ না-পারল আলোকের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলতে, শেষে আজকের দেখা হওয়াটা অর্থহীন হয়ে গেল এমন একটা বোধ নিয়ে দুজনের ছাড়াছাড়ি হলো।
আলোক আজ সেই চিঠিটা টাইপ করে খামে পুরে নিয়ে আসবে, কাল সেই চিঠিটা সুরঞ্জনার অফিসে জমা দেবে—এখন পর্যন্ত এ রকমই ব্যবস্থা, মানে কথা হয়ে আছে। চিঠিটা কি আর সুরঞ্জনা তার অফিসে টাইপ করে নিতে পারত না? অফিসে যদি না-পারত তাহলে বাইরে কোথাও থেকে টাইপ করে নিত। আলোককে ইছাপুরের অফিস থেকে চিঠি টাইপ করে এনে সুরঞ্জনাকে দিতে হবে আর সুরঞ্জনা সেটা সই করে অফিসে জমা দেবে, তাও আবার কালই, ঘটনাটা এমন না-হতেও তো পারত। এমন না-হওয়ারই তো কথা ছিল গত ছ-মাস। বা এক বছর। বা দুই বছর। আলোক তো ওদের ইছাপুর অফিসে বদলি নিয়েছে দুই বছরের বেশি, বদলি নেবারও কয়েক মাস পর, ক-মাস পর, ছ-মাস আট মাস, এক বছরের আগে কি কোয়ার্টার পাওয়া যায়? তা হলে এতদিন ধরেই এই চিঠি দেয়ার ব্যাপারটিকে পিছিয়ে দিয়েছে সুরঞ্জনা?
শেয়ালদা মেইনের হুইলারের সামনে সুরঞ্জনা একটু আগেই পৌঁছে যায়—কলকাতায় কোথাও যথাসময়ে পৌঁছুতে হলে হাতে সময় নিয়ে বেরিয়ে, শেষে অনেক সময় বিঘ্নহীন পথ পেরিয়ে আগেভাগেই হাজির হতে হয় যেমন। সুরঞ্জনার একটু দেরি হলে মহাভারত অশুদ্ধ হতো না, আলোকময় আগে এসে গেলে তার জন্যে এখানে, এই হুইলারের সামনেই অপেক্ষা করত, আর তেমন একটু বিশ্রামের মন নিয়েই তো সুরঞ্জনার আশা উচিত ছিল। আগে যখন পৌঁছেই গেছে, সে শেয়ালদা স্টেশনটায় একটু ঘুরপাক খেতেও পারত। তেমন কিছুও না করে একেবারে সরাসরি এসে হুইলারের এই ঘুপচিটার মধ্যে ঢুকে গেল, এমনকি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পত্র-পত্রিকাগুলোর ওপর চোখও বোলাল না। যেন আলোকের সঙ্গে তার আজ এমনই দরকার যে তার অন্য কোনো দিকে মন দেয়ার মতো কোনো অবসর নেই।
অথচ সুরঞ্জনা জানে যে আলোক এলে সে আর তার অস্থিরতার কারণটা আলোককে বলতে পারবে না। এমন হতে পারে, আলোক এসে পড়লে সে আর অস্থির বোধ করবে না। আবার, এমনও তো আজকাল যে-কোনো দিন ঘটে যাচ্ছে যে সে না-পারল আলোককে তার অস্থিরতার কারণ বোঝাতে, অথচ না-পারল আলোকের সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলতে, শেষে আজকের দেখা হওয়াটা অর্থহীন হয়ে গেল এমন একটা বোধ নিয়ে দুজনের ছাড়াছাড়ি হলো।
আলোক আজ সেই চিঠিটা টাইপ করে খামে পুরে নিয়ে আসবে, কাল সেই চিঠিটা সুরঞ্জনার অফিসে জমা দেবে—এখন পর্যন্ত এ রকমই ব্যবস্থা, মানে কথা হয়ে আছে। চিঠিটা কি আর সুরঞ্জনা তার অফিসে টাইপ করে নিতে পারত না? অফিসে যদি না-পারত তাহলে বাইরে কোথাও থেকে টাইপ করে নিত। আলোককে ইছাপুরের অফিস থেকে চিঠি টাইপ করে এনে সুরঞ্জনাকে দিতে হবে আর সুরঞ্জনা সেটা সই করে অফিসে জমা দেবে, তাও আবার কালই, ঘটনাটা এমন না-হতেও তো পারত। এমন না-হওয়ারই তো কথা ছিল গত ছ-মাস। বা এক বছর। বা দুই বছর। আলোক তো ওদের ইছাপুর অফিসে বদলি নিয়েছে দুই বছরের বেশি, বদলি নেবারও কয়েক মাস পর, ক-মাস পর, ছ-মাস আট মাস, এক বছরের আগে কি কোয়ার্টার পাওয়া যায়? তা হলে এতদিন ধরেই এই চিঠি দেয়ার ব্যাপারটিকে পিছিয়ে দিয়েছে সুরঞ্জনা?
বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক!