আত্মজৈবনিক উপন্যাস
ঘরে ফেরা
সমরেশ মজুমদার
আমার বাড়িতে একটা কথা চালু আছে। আমি হয়তাে তিনতলার ঘরে বসে লিখছি। একতলায় কেউ বেল বাজাল। আগে থেকে না জানিয়ে হুট করে বাড়িতে ঢুকে দাঁত বের করে চলে এলাম সমরেশদা’ যাঁরা বলেন তাদের খুব খারাপ লাগে আমার। লেখা ছেড়ে নীচে নেমে অবান্তর কিছু কথা বলে উপরে উঠে এসে দেখি, লেখাটা মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে। তাই এসব ক্ষেত্রে আমি নীচে নামব না, বলে দেওয়া হবে উনি বাড়িতে নেই। বাড়িতে আছেন এবং লিখছেন বললে আগন্তুক আবদার করবেন, দু মিনিটের জন্য নামতে বলুন, মাত্র দু-মিনিট। নেমে দেখেছি গাজানাের সময়টা কুড়ি মিনিট হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে মিথ্যে বলতে হয় বাড়ির লােকদের। কিন্তু কখনও কখনও বেল বাজে, আমি লিখছি, কাউকে বাড়িতে আসতেও বলিনি, অথচ বাড়ির লােক নীচ থেকে ঘুরে এসে বলে, যাও, নীচে যাও।
প্রথম প্রথম অবাক হতাম, কে এসেছে?
উত্তর হত, তােমার দেশতুতাে ভাই।
অর্থাৎ নর্থ বেঙ্গলের লােক হলে তার সাতখুন মাপ। বিশেষ করে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহারের মানুষ হলে এবং তাঁকে সাতজন্মে না দেখলেও আমি নীচে যাব। এই নিয়ে মস্করা করে বাড়ির মানুষ। উঃ, বদ্যিরা বাকি বদ্যিদের টানে, গুজরাটিরা শুনেছি গুজরাটিদের দেখে, নর্থ বেঙ্গলের লােক শুনলেই হয়ে গেল, সব আপত্তি উধাও।
এটা হয়। স্বীকার করতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। সেই নর্থ বেঙ্গলের কাগজ হল এই উত্তরবঙ্গ সংবাদ। আমি জন্মেছিলাম গয়েরকাটা চা-বাগানে। পড়েছি জলপাইগুড়ি স্কুলে। ছেলেবেলায় গতকালের কলকাতার বাংলা কাগজ আজ আসত। পরে সকালের কাগজ বিকালে পেতাম। হঠাৎ ভাের না হতেই কদমতলার মােড়ে কাগজ বিক্রি দেখে অবাক হলাম। দিনের কাগজ ভােরেই পৌঁছে গেছে। সেই প্রথম দিকে কাগজের মান তেমন ভালাে ছিল না।
ঘরে ফেরা
সমরেশ মজুমদার
আমার বাড়িতে একটা কথা চালু আছে। আমি হয়তাে তিনতলার ঘরে বসে লিখছি। একতলায় কেউ বেল বাজাল। আগে থেকে না জানিয়ে হুট করে বাড়িতে ঢুকে দাঁত বের করে চলে এলাম সমরেশদা’ যাঁরা বলেন তাদের খুব খারাপ লাগে আমার। লেখা ছেড়ে নীচে নেমে অবান্তর কিছু কথা বলে উপরে উঠে এসে দেখি, লেখাটা মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে। তাই এসব ক্ষেত্রে আমি নীচে নামব না, বলে দেওয়া হবে উনি বাড়িতে নেই। বাড়িতে আছেন এবং লিখছেন বললে আগন্তুক আবদার করবেন, দু মিনিটের জন্য নামতে বলুন, মাত্র দু-মিনিট। নেমে দেখেছি গাজানাের সময়টা কুড়ি মিনিট হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে মিথ্যে বলতে হয় বাড়ির লােকদের। কিন্তু কখনও কখনও বেল বাজে, আমি লিখছি, কাউকে বাড়িতে আসতেও বলিনি, অথচ বাড়ির লােক নীচ থেকে ঘুরে এসে বলে, যাও, নীচে যাও।
প্রথম প্রথম অবাক হতাম, কে এসেছে?
উত্তর হত, তােমার দেশতুতাে ভাই।
অর্থাৎ নর্থ বেঙ্গলের লােক হলে তার সাতখুন মাপ। বিশেষ করে জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কোচবিহারের মানুষ হলে এবং তাঁকে সাতজন্মে না দেখলেও আমি নীচে যাব। এই নিয়ে মস্করা করে বাড়ির মানুষ। উঃ, বদ্যিরা বাকি বদ্যিদের টানে, গুজরাটিরা শুনেছি গুজরাটিদের দেখে, নর্থ বেঙ্গলের লােক শুনলেই হয়ে গেল, সব আপত্তি উধাও।
এটা হয়। স্বীকার করতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। সেই নর্থ বেঙ্গলের কাগজ হল এই উত্তরবঙ্গ সংবাদ। আমি জন্মেছিলাম গয়েরকাটা চা-বাগানে। পড়েছি জলপাইগুড়ি স্কুলে। ছেলেবেলায় গতকালের কলকাতার বাংলা কাগজ আজ আসত। পরে সকালের কাগজ বিকালে পেতাম। হঠাৎ ভাের না হতেই কদমতলার মােড়ে কাগজ বিক্রি দেখে অবাক হলাম। দিনের কাগজ ভােরেই পৌঁছে গেছে। সেই প্রথম দিকে কাগজের মান তেমন ভালাে ছিল না।
বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক!