শত গল্প - অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
সে-কাল বাঙালির চাকুরি-হীনতার কাল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর চরম মন্দার কাল ৷ যে কোন কাজ, টিউশনি আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টায় ছিল শিক্ষিত বাঙালি তরুণ! তারপর যদি সে স্বাস্থ্যহীন ও রুগণ হয় তো তার জীবন তখন ‘সোনায় সোহাগা’ ৷ দারিদ্র্য, অর্থকষ্ট, রোগভোগদীর্ণ মানুষ রাজা হতে পারে দুইবারই––কোনও ভাবে বরপণ নিয়ে বিয়ে করে অথবা মৃত্যুর পর মানুষের কাঁধে চড়ে শেষ যাত্রায় ৷ যতনবিবি, তসবির, কাক লেখকের অভিজ্ঞতা-সঞ্জাত গল্প ৷ অচিন্ত্যকুমার যখন আইন-ব্যবসায় পরিত্যাগ করে মুন্সেফের কাজ নিলেন তখন থেকেই তাঁর এই গ্রামজীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ৷ এই অভিজ্ঞতা দিনে দিনে সমৃদ্ধ হয়েছে ৷ গ্রামের দরিদ্র হিন্দু-মুসলমানকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে––অনুভব করেছেন তাদের অন্নকষ্ট ও নিদারুণ দারিদ্র্যের যন্ত্রণা ৷ যে যন্ত্রণায় মানুষ এক মুহূর্তে উপকারী মানুষকে পরিত্যাগ করে চাল যায় আরও প্রাপ্তির লোভে, কন্যাকে পিতা দেন-মোহরের নামে কার্যত বেচে বার বার, চরম দুর্ভিক্ষের সময়েও মানুষ সামাজিক প্রথা ছাড়তে পারে না ৷ গল্পগুলোতে লেখকের গ্রামজীবন ও গ্রামীণ মানুষদের প্রতি এক অত্যাশ্চর্য সহমর্মিতার নিদর্শন দেখা যায় ৷ কালের ললাট এক হতভাগ্য মানুষের উপাখ্যান ৷ যার স্পর্শে ও সান্নিধ্যে আছে মৃত্যুর এক অদ্ভুত সংক্রমণ––যাকে সে ভালোবাসে সে-ই মৃত্যু কবলিত হয় ৷ এক করুণ পরিণতিতে কাহিনীর সমাপ্তি ৷ দুইবার রাজা যেমন লেখকের প্রথম বিখ্যাত গল্প, কালের ললাট তেমনি লেখকের শেষ জীবনের উল্লেখযোগ্য গল্প বলা যায় ৷ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তর ছোটগল্প প্রসঙ্গে শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন––
সে-কাল বাঙালির চাকুরি-হীনতার কাল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর চরম মন্দার কাল ৷ যে কোন কাজ, টিউশনি আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টায় ছিল শিক্ষিত বাঙালি তরুণ! তারপর যদি সে স্বাস্থ্যহীন ও রুগণ হয় তো তার জীবন তখন ‘সোনায় সোহাগা’ ৷ দারিদ্র্য, অর্থকষ্ট, রোগভোগদীর্ণ মানুষ রাজা হতে পারে দুইবারই––কোনও ভাবে বরপণ নিয়ে বিয়ে করে অথবা মৃত্যুর পর মানুষের কাঁধে চড়ে শেষ যাত্রায় ৷ যতনবিবি, তসবির, কাক লেখকের অভিজ্ঞতা-সঞ্জাত গল্প ৷ অচিন্ত্যকুমার যখন আইন-ব্যবসায় পরিত্যাগ করে মুন্সেফের কাজ নিলেন তখন থেকেই তাঁর এই গ্রামজীবনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ৷ এই অভিজ্ঞতা দিনে দিনে সমৃদ্ধ হয়েছে ৷ গ্রামের দরিদ্র হিন্দু-মুসলমানকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে––অনুভব করেছেন তাদের অন্নকষ্ট ও নিদারুণ দারিদ্র্যের যন্ত্রণা ৷ যে যন্ত্রণায় মানুষ এক মুহূর্তে উপকারী মানুষকে পরিত্যাগ করে চাল যায় আরও প্রাপ্তির লোভে, কন্যাকে পিতা দেন-মোহরের নামে কার্যত বেচে বার বার, চরম দুর্ভিক্ষের সময়েও মানুষ সামাজিক প্রথা ছাড়তে পারে না ৷ গল্পগুলোতে লেখকের গ্রামজীবন ও গ্রামীণ মানুষদের প্রতি এক অত্যাশ্চর্য সহমর্মিতার নিদর্শন দেখা যায় ৷ কালের ললাট এক হতভাগ্য মানুষের উপাখ্যান ৷ যার স্পর্শে ও সান্নিধ্যে আছে মৃত্যুর এক অদ্ভুত সংক্রমণ––যাকে সে ভালোবাসে সে-ই মৃত্যু কবলিত হয় ৷ এক করুণ পরিণতিতে কাহিনীর সমাপ্তি ৷ দুইবার রাজা যেমন লেখকের প্রথম বিখ্যাত গল্প, কালের ললাট তেমনি লেখকের শেষ জীবনের উল্লেখযোগ্য গল্প বলা যায় ৷ অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তর ছোটগল্প প্রসঙ্গে শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন––
‘অচিন্ত্যকুমারের ব্যক্তিজীবনলব্ধ অভিজ্ঞতার বিপুল প্রসার ও সজীব প্রত্যক্ষতাই আমাদের বিস্ময় উৎপাদন করে ৷ ...তিনি বাঙলার প্রায় প্রতিটি পল্লী ও শহর-অঞ্চলে ঘুরেছেন ৷... আইনের নাগপাশে বদ্ধ মানুষের মনে যে নব নব জটিলতা ফাঁস পাকায়, যে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া নাটকীয় সংঘাত ঘনীভূত করে...অচিন্ত্যকুমারের ছোটগল্পে তার অপূর্ব রসরূপ দানা বেঁধে উঠেছে ৷নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যটিও মূল্যবান––
‘‘অচিন্ত্যকুমারের গল্পভাণ্ডার যেমন ব্যাপ্ত, তেমনি বিচিত্র ৷ মধ্যবিত্ত মননের তিনি নির্মম ব্যাখ্যাতা, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনায় তিনি উদ্ভাসিত, আবার বাংলাদেশের একান্ত গ্রামীণ জীবনের সুখ-দুঃখ প্রেমে বেদনার তিনি আশ্চর্য দ্রষ্টা ৷ ...মন্বন্তরের গ্রাম-গ্রামান্তকে ক’জন চেনাতে পেরেছেন অচিন্ত্যকুমারের মতো?’’
বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক!