Ticker

6/recent/ticker-posts

মহাভারতের মহারণ্যে - প্রতিভা বসু [০৬]

amarboi
মহাভারতের মহারণ্যে
প্রতিভা বসু



আসলে পাণ্ডুর ক্ষেত্রজ পরিচয় দিয়ে সাক্ষী-প্রমাণহীন পরিস্থিতিতে পাঁচটি বড়ো বড়ো পাহাড়ি পুত্রকে নিয়ে কুন্তী যেদিন পুনরায় কুরুরাজ্যে প্রত্যাবৃত হলেন, সেদিন থেকেই সেখানে শনির প্রবেশ ঘটলো। কুরুকুলে আশ্রিত পালিত বিদুর নামের গোয়েন্দাটি, বিশেষভাবে দুর্যোধনের সঙ্গে এমন পর্যাপ্ত প্রতিকূল ব্যবহারে লিপ্ত হলেন যার কোনো সীমা রইলো না। বৈরানল তখনই প্রজ্বলিত হলো। দুর্যোধনের অত্যাচারে নয়, বিদুরের কুচক্রে।

প্রত্যয় হয়, কুমারীকাল থেকেই কুন্তীর নৈতিক চরিত্র খুব শুদ্ধ ছিলো না। প্রাক-বিবাহ কালে তিনি যখন সূর্যের সঙ্গে সংগত হয়ে কর্ণের জন্ম দেন (এই সূর্য নিশ্চয়ই আকাশের সূর্য নয়, কুন্তীরই কোনো ভালোবাসার আর্য যুবক) তখন কুন্তী গোপনে নিভৃত কক্ষে তখাকথিত সূর্যকে অবশ্যই একদিন সময় ও সুযোগ মতো আহ্বান করে এনেছিলেন। নির্জন কক্ষে সূর্য তাঁকে আত্মদান করতে বলেন। কুন্তী ভয় পান। কুমারী অবস্থায় যদি সন্তানসম্ভবা হন তখন পিতামাতা ও সমাজকে কী কৈফিয়ৎ দেবেন? সূর্য নিবৃত্ত হন না। তাঁর চরিত্র বিষয়েও কটাক্ষ করেন। অতঃপর কুন্তী তাঁর সঙ্গে সংগত হন এবং গর্ভধারণ করেন। গর্ভাবস্থায় সর্বদাই খুব সংবৃতভাবে থাকতেন, কেউ বুঝতে পারতো না। কেবল তার এক ধাত্রীর সম্যক জ্ঞান ছিলো। যথা সময়ে তিনি অত্যন্ত রূপবান একটি পুত্র লাভ করেন। কুন্তী সেই ধাত্রীর সঙ্গে মন্ত্রণা করে, মোম দিয়ে ঢাকা অতি বিস্তীর্ণ ও আচ্ছাদন সম্পন্ন একটি পেটিকার মধ্যে রক্ষিত করে সেই পুত্রকে অশ্বনদীতে নিক্ষেপ করেন। বিভিন্ন চেহারার অন্য পুত্রদেরও কুলের ঠিকানা অজ্ঞাত বলেই স্বর্গের দেবতাদের পিতা হিশেবে মর্ত্যে নামিয়ে আনতে হয়েছিলো। ধারণা হয়, যে দুটি সন্তানকে তিনি মাদ্রীর সন্তান বলে পরিচয় দিচ্ছেন, সে দুটিও তাঁর। সেদিক থেকে তাঁকে স্বৈরিণী আখ্যা দিলেও মিথ্যে বলা হয় না। প্রকৃত পক্ষে, তিনি অনেক পুরুষের সঙ্গেই সংগত হয়ে তাঁর সম্ভোগস্পৃহা নিবৃত্ত করেছেন। অবশ্য কথিত আছে কুন্তীর সেবায় সন্তুষ্ট হয়ে এক মুনি তাকে বর দিয়েছিলেন, কুন্তী ইচ্ছা করলেই যে দেবতাকে স্মরণ করবেন তিনি আসবেন। সম্ভবত কুন্তীর বহুগামিতা ঢাকতেই এ বরদানের গল্পটি তৈরি হয়েছিলো।

বল্কলধারী যে পাঁচটি সন্তান নিয়ে এসে কুন্তী রাজপুরীতে প্রবিষ্ট হলেন এঁরা কার দ্বারা জাত তা-ও আমরা যেমন জানি না, প্রকৃত পক্ষে পাণ্ডুর ক্ষেত্রজ কিনা তা-ও আমরা জানি না। এ-ও বিশ্বাস করা সম্ভব নয় যে, কোনো পশু পাণ্ডুকে অভিশাপ দিয়েছিলো বলেই স্বীয় পত্নীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে সংগত হতে গেলেই তাঁকে মৃত্যুর কোলে অবসিত হতে হবে। এসব অপ্রাকৃত গল্প নেহাৎই গল্প। সত্যের সঙ্গে এর কোনো সংশ্রব নেই। এটুকুই সত্য যে পাণ্ডু অক্ষম ছিলেন।

যে বালক ক’টি কুরুকুলের ভ্রাতা সেজে এলো, তার মধ্যে সবচেয়ে বড়ো যুধিষ্ঠির। কুন্তী বললেন, পাণ্ডু তাঁকে বলেছিলেন, ক্ষেত্র বিশেষে কানীন পুত্র, অর্থাৎ পত্নীর কুমারী জীবনেরও যদি কোনো পুত্র বর্তমান থাকে সেই পুত্রও প্রয়োজনে পতির পুত্র হিশেবেই গ্রহণযোগ্য হয়। কুন্তীর ভাষ্য, পাণ্ডু পুত্রাকাঙ্ক্ষী হয়েছিলেন। কুন্তীর তো কুমারী কালের পুত্র কর্ণ বর্তমানই ছিলেন এবং কুন্তী এ-ও জানতেন কর্ণ কার ঘরে কোন পিতামাতার নিকট প্রতিপালিত হচ্ছেন। সে কথা পাণ্ডুর কাছে বললেন না কেন? কেন গোপন করলেন? বিদুরের সঙ্গে সংগত হয়ে যে তিনি আরো একটি অবৈধ সন্তানের জননী হয়েছেন, নিশ্চয়ই সেই সত্য প্রকাশিত হয়ে যাবার ভয়ে। তদ্ব্যতীত, কর্ণকে প্রকাশিত করলে কর্ণই হবেন জ্যেষ্ঠ। বিদুরের রাজার পিতা হবার সাধ তাহলে সমূলেই বিনষ্ট হয়ে যায়। সেটা কি বিদুরের মতো মানুষ নিঃশব্দে মেনে নেবেন? কখনোই না।

অনুমান হয় যুধিষ্ঠির সহ অন্য পুত্ররা এমন কোনো গোপনীয় স্থানে বর্ধিত হচ্ছিলেন যা বিদুর খুব ভালোভাবেই চিনতেন। তারপরে এমন একটা সময় এলো যখন বিদুর দেখলেন এখনই যুধিষ্ঠিরকে প্রকাশ না করলে দুর্যোধনই রাজা হয়ে বসবেন। অথচ পাণ্ডু যতোদিন জীবিত আছেন বিদুর যে পাণ্ডুপত্নীর সঙ্গে গোপন প্রণয়ে আসক্ত হয়ে সন্তান উৎপাদন করেছেন সে কথা প্রকাশ করতে পারেন না। পুত্রদের পাণ্ডুর ক্ষেত্রজ হিশেবেই তো প্রকাশ করতে হবে। অথচ পাণ্ডু মৃত না হলে সেই উদ্দেশ্য সাধিত হবে কী করে?

মহারাজা পাণ্ডুর মৃত্যুর কারণ হিশেবে যা বলা হয়েছে সেটা একটা অবিশ্বাস্য রূপকথা মাত্র। বাস্তব সত্য হিশেবে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে এ ইতিহাস, অর্থাৎ এই অতি প্রাচীন ইতিহাস, অনেক স্থলেই রূপকথার সহযোগে সম্পাদিত সেখানে স্বর্গবাসী দেবতারা অনায়াসে মর্ত্যে আগমন করেন, মর্ত্যের মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করেন। মনুষ্যের জন্মের জন্য কেবলমাত্র নারীগর্ভই একমাত্র আধার নয়। মানুষ মাছের পেটেও জন্মাতে পারে, কলসীকেও জরায়ু হিশেবে ধরা যেতে পারে, আবার ঝোপেও শুক্র পতন হলে তা থেকে মানুষ জন্মায়। এইসব অপ্রাকৃত ঘটনা বাদ দিয়ে বাস্তবানুগ আসল অংশটা নিয়েই আমাদের ভাবনাচিন্তা, বিশ্লেষণ। সে দিক থেকে বিচার করলে, পাণ্ডু-মাদ্রীর আকস্মিক মৃত্যু অবশ্যই রহস্যময়। তবু ধরা যাক, যেভাবেই হোক, পাণ্ডু অকস্মাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছিলেন। কিন্তু মাদ্রী? মাদ্রীর কীভাবে মৃত্যু হলো? মানুষ তো ইচ্ছে করলেই মরে যেতে পারে না? তারও একটা কারণ থাকা প্রয়োজন। তাছাড়া, মহাভারতের সময়ে সহমরণের প্রচলন আদৌ ছিলো না।

কুন্তী বলছেন, পতির মৃত্যুতে মাদ্রী যখন আর্তনাদ করে উঠেছিলেন, সেই আর্তনাদ শুনে কুন্তী রোদন করতে করতে সেখানে গেলেন। কেন? মাদ্রীর আর্তনাদ শুনেই কি তিনি বুঝে ফেললেন যে পাণ্ডুর মৃত্যু হয়েছে? নচেৎ তিনি রোদন করতে করতে যাবেন কেন? কুন্তী নিজে তখন কোথায় ছিলেন? এই আর্তনাদেরই প্রতীক্ষা করছিলেন কি? ক্ষণকাল পুর্বে যে সুস্থ সবল স্বামী বেড়াতে বেরিয়েছেন, তাঁর মৃত্যু ঘটেছে, একথা অবশ্যই কুন্তীর মনে আসা সম্ভব নয়। মানুষ অনেক কারণেই আর্তনাদ করে উঠতে পারে। পাহাড়ে পর্বতে জঙ্গলে আর্তনাদ করে ওঠার মতো অনেক ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হওয়া বিচিত্র নয়। ‘কী হলো, কী হলো’ বলে অবশ্যই তিনি চেঁচিয়ে উঠে ছুটে যেতে পারেন। মাদ্রীকে নিয়ে পাণ্ডু তো তখন বেড়াতে বেরিয়েছিলেন, বাসস্থানের অতি নিকটে না থাকাটাই স্বাভাবিক। যখন সেই আর্তনাদ শুনে রোদন করতে করতে কুন্তী ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছোলেন তৎক্ষণাৎ দুজনের আর্তনাদই থেমে গেলো। থামলো কেন? পাণ্ডু তো তাঁরও স্বামী। মাদ্রীর মতো তাঁর কণ্ঠেও তো সেই শোক আরো বেশি তীব্র হয়ে উত্থিত হবার কথা। তবে তিনি যাওয়া মাত্রই সব স্তব্ধ হয়ে গেলো কেন? তিনি তো প্রতিবেশী নন যে সান্ত্বনা দিয়ে চুপ করাবেন মাদ্রীকে। আর নিজেও চুপ করে থাকবেন। যদিও কুন্তী বলছেন, তিনি অনেকক্ষণ বিলাপ করেছেন। সেই বিলাপ এই কারণে, পতির সঙ্গে তিনিও মৃত্যুবরণ করতে চেয়েছিলেন, কেননা তিনি জ্যেষ্ঠা। মাদ্রী বললেন, কামভোগে অতৃপ্তিবশত তিনিই পতির অনুসরণ করবেন। কুন্তীর ব্যাখ্যায় মনে হচ্ছে, মানুষটি যে চলে গেলেন তাঁর জন্য কারো কোনো বেদনা নেই। কুন্তী জ্যেষ্ঠা হিশেবে অনুসরণ করতে চাইলেন, আর মাদ্রী কামভোগে অতৃপ্ত থাকায় অনুসরণ করতে চাইলেন। এই সময়ে চোখের জলে ডুবে না থেকে, দুজনেই কান্নাকাটি করে অধীর হয়ে লোকজন যোগাড় না করে, শান্ত মনে এই তর্ক কি স্বাভাবিক? মৃতদেহটাও তো সরাতে হবে সেখান থেকে? পুত্র ব্যতীত আর কে সেই পাহাড়ি অরণ্যের স্বল্প জননিবাসে গিয়ে ডেকে আনবে লোকজন? কিন্তু কুন্তী বলছেন, সেখানে ছেলেদের তিনি যেতে দেননি। ছেলেদেরও না, অন্য কোনো প্রাণীকেও নয়। সম্ভবত যে একজন প্রাণী প্রকৃতই কোনো গুপ্ত ষড়যন্ত্রের সাক্ষী হয়েছিলেন তিনি মাদ্রী। তাই মাদ্রীকেও মুছে দিতে হলো এই চিত্র থেকে।

কুন্তী বলেছেন তাঁদের তর্কের শেষ সিদ্ধান্তে মাদ্রীই সহমরণে গেলেন। তারপর মাদ্রী ও পাণ্ডুর সতেরো দিনের গলিত শব নিয়ে পঞ্চপুত্রসহ কুন্তী হস্তিনাপুরে এলেন। মাদ্রী যে সহমরণে অন্তত যাননি সেটা দুটি মৃতদেহ এখানে এসে সৎকৃত হওয়াতেই প্রমাণিত হলো। পতির চিতার অনলে জীবিত অবস্থায় ঝাঁপ দেওয়াকে সহমরণ বলে। তবে মাদ্রী কীভাবে মৃত হলেন? হয় তাকে আত্মহত্যা করতে হয়, নতুবা কারো হস্তে নিহত হতে হয়। এই দুটি মানুষের মৃত্যুই এমন অবিশ্বাস্যভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে যে প্রত্যয় হয় এই মৃত্যু কোনো ষড়যন্ত্রের দ্বারাই সংঘটিত। যাদের দ্বারা এই ষড়যন্ত্র সাধিত হয়েছিলো মাদ্রী তাদের চিনতেন। সেজন্য মাদ্রীকে নিহত হতে হলো। কুন্তী যে কুন্তী ব্যতীত কোনো দ্বিতীয় প্রাণীকে সেখানে উপস্থিত হতে দেননি তার কারণ সেটা অত্যন্ত গোপনে এবং নিঃশব্দে সাঙ্গ করার প্রয়োজন ছিলো। যিনি এইমাত্র ছিলেন এইমাত্র নেই, এই হঠাৎ-মৃত্যু এমন একটা অবিশ্বাস্য এবং সাংঘাতিক ঘটনা যে কুন্তীর পক্ষেও সেটা সহ্য করা সম্ভব ছিলো না। পাণ্ডুর মৃত্যুতে মাদ্রী যে ভাবে আর্তনাদ করে উঠেছিলেন, কুন্তীর কণ্ঠ থেকেও সেই আর্তনাদই বেরিয়ে আসা স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু ছুটে গিয়ে কুন্তী নিজেও আর্তনাদ করলেন না, মাদ্রীর আর্তনাদও স্তব্ধ করে দিলেন। আর যারা পিতৃহীন হলো, তাদেরও কান্নার অবকাশ হলো না। কেননা কুন্তী তাদেরও সেখানে যেতে দেননি। ঐ স্বজন বিরহিত পর্বতশৃঙ্গে যার পাঁচ-পাঁচটি কিশোর পুত্র বর্তমান, তাদের কাছেও কি এই মৃত্যু গোপন রাখা প্রয়োজন ছিলো? কেন ছিলো? তারাও সেই ঘাতকটিকে চিনতো বলে? অথবা তারা আদৌ পাণ্ডুর ক্ষেত্রজ ছিলো না, অন্যত্র বর্ধিত হচ্ছিলো কুন্তী আর বিদুরের ছায়ায়? যুধিষ্ঠিরের বয়স ষোলো, ভীম পনেরো, অর্জুন চোদ্দো, নকুল সহদেব তেরো। এরা কেউই কি নির্বোধ শিশু ছিলো যে পিতামাতার এই মৃত্যু দেখে ভয় ব্যতীত আর কিছু অনুভূতি হবে না? এই পুত্রদেরই তো এই মহাসংকটে মহাসহায় স্বাভাবিক ছিলো। ক্ষেত্রজ হলে সেখানে ছুটে যাবার অধিকারও আছে তাদের। তবে এই গোপনতা কেন?

এখন দেখা যাচ্ছে সমস্ত ঘটনাটাই ‘কেন’ কণ্টকিত। যেমন, পতির এই আকস্মিক মৃত্যুতে কেন কুন্তীর কণ্ঠে ক্রন্দনের রোল উত্থিত হলো না? কেন দুজন মানুষের মৃত্যু সে এভাবে চাপা দিয়ে নিঃশব্দ রইলো? কেন এই মৃত্যুকে একান্তভাবেই সাক্ষীহীন রাখলো? কেন সাক্ষীহীন রাখবার জন্য মাদ্রীকেও মুছে দিলো এই পৃথিবী নামের গ্রহ থেকে? এতোগুলো ‘কেন’র কোনো জবাব দেননি ব্যাসদেব। ‘যার যা ইচ্ছা ভেবে নাও’, অথবা ‘মেনে নাও’ এভাবেই রচিত হয়েছে সমস্ত ঘটনাটা। অতএব কুন্তী ব্যতীত আর যারা সাক্ষী রইলো, তারা পর্বতশৃঙ্গের নিঃশব্দ নির্জন নিবিড় অরণ্য, আর মাথার উপরে অনন্ত নীল মহাকাশ। আরো একটা প্রশ্ন: যেই মাত্র ধৃতরাষ্ট্রের পুত্র হলো, তক্ষুনি কি পাণ্ডুর ক্ষেত্রজ নেওয়া আবশ্যক হলো? তার আগেও নয়, পরেও নয়? ক্ষেত্রজ নিলেও সেটা এতোদিন গোপন রাখবার কী প্রয়োজন ছিলো? পাণ্ডু অবশ্যই নির্বাসনে যাননি, বাড়ির সঙ্গে সংশ্রবচ্যুতও ছিলেন না, তথাপি এটা পাণ্ডু-মাদ্রীর মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত গোপন রইলো কেন?



চলবে...

বাকি পর্বগুলো পড়ুন এই লিঙ্কেঃ https://www.amarboi.com/search/label/mahabharatera-maharanye