ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন - মনোরঞ্জন ব্যাপারী
Itibritte Chandal Jivan
তথাকথিত ভদ্র সমাজের পরিচিতির বাইরে যে অনন্য শক্তিশালী
সাহিত্যধারা বয়ে চলেছে তারই মস্ত বড় প্রমাণ এই আখ্যান।
কনিষষ্ক চৌধুরী
মনােরঞ্জন! আরও লেখাে অনেক লেখাে।
তুমি আমার ও আমাদের গর্ব –
মনােরঞ্জন ব্যাপারী আমার অনেক বছরের চেনা সেই লেখক, যাকে আমি লেখক হয়ে উঠতে দেখেছি। লিখতে লিখতে লেখক হয়। এই কথাও মনােরঞ্জন নিজের জীবন ও কর্মে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
“ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন” নামকরণটিও সার্থক। আজকের সমাজে স্বীকৃতি পেতে হলে জন্মসুত্রে কেউ ব্রাহ্মণ, না চণ্ডাল, সে বিচার করার মানসিকতা আর নেই। তবু, জন্মসূত্রে কেউ চণ্ডাল হয়ে থাকেন, তাঁর এগিয়ে যাবার পথটা হয়তাে আজও কুসুমাস্তীর্ণ নয়।
মনােরঞ্জনের বইয়ের নাম “ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন” কিন্তু এটা তাে আজও সত্য, যে শুধুই নিজের যােগ্যতার ভিত্তিতে সমাজে পরিচিতি গড়ে তােলা কঠিন।
জন্ম বা পরিবার সূত্রে যার পরিচিতি নেই, তার পক্ষে আত্মপরিচয়-এর ভিত্তিতে পরিচিতি গড়ে তােলা সম্ভবত আরও কঠিন।
মনােরঞ্জন ব্যাপারী একেবারেই স্বপরিচয়ে স্বীকৃতি পেতে চান। এই দাবী অভিনন্দনীয়। আমার অনুরােধ, সবাই তার আত্মজীবনীটি পড়ুন, এবং অন্যদের পড়ান।
মহাশ্বেতা দেবী
'ইতিবৃত্তে চণ্ডালজীবন' বইটির প্রথম খণ্ড পড়ে মনের মধ্যে একটা বিদ্যুৎচমক তৈরি হয়েছিল। আঘাতে আর দীপ্তিতে পূর্ণ এ রকম একখানা বই লিখলেন সমাজের একজন অবহেলিত মানুষ, লিখলেন তার নিজের কটু – কিন্তু অপরাজেয় অভিজ্ঞতার সম্পূর্ণ রূপটি। শুধু সেই অভিজ্ঞতার বৈশিষ্ট্যেই নয়, রচনার কুশলতাতেও সে-বই ছিল মুগ্ধ করার মতাে। জনে-জনে পড়াতে ইচ্ছে হয়েছে বইটি।
সে-বইয়ের লেখক মনােরঞ্জন ব্যাপারী আজ এক সুপরিচিত নাম। শুধু ওই লেখাটিতেই নয়, আরাে বেশ কিছু গল্পকাহিনি লিখে এতদিনে পাঠকসমাজে এক আদৃত মানুষ তিনি।
তাঁর রচনা-উত্তরকালীন জীবনের কিছু নতুন দেখাশােনা আর ভাবনাচিন্তা এর মধ্যে ধরা আছে, আছে অবশ্য আগেকার জীবনেরও ফেলে আসা কিছু কথা। এবারে তিনি এসে পড়েছেন যে সংস্কৃতি সমাজের বা লেখকসমাজের বৃত্তে, সেখানেও আছে কিছু প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে অবধারিত কিছু লাঞ্ছনারও ইতিহাস, আমাদের গােটা সমাজটাকে স্পষ্টভাবে দেখবার বা দেখাবার আয়ােজন এর মধ্যে আছে ছড়িয়ে। তবে, তিনি আজ নিজেই এক স্রষ্টা বলে তাকে নিশ্চয় মনে রাখতে হবে, শিল্পসমাজ থেকে বিশেষ কিছু প্রত্যাশা, নির্মম প্রত্যাখ্যান লেখকের পক্ষে কখনাে-কখনাে অনিবার্য। এমনকী, কখনাে-কখনাে তা হয়তাে উপকারীও। নিজের লেখায় মগ্ন থাকলে লেখক এর সব কিছুই একদিন ভুলে যেতে পারেন।
মনােরঞ্জন আরাে দেখুন, কেননা দেখার চোখ আছে তার। আরাে লিখুন, কেননা লেখার হাত আছে। তার? পাঠক হিসাবে আমরা আরাে প্রতীক্ষা করে থাকব।
শঙ্খ ঘােষ
0 Comments