কায়েস আহমেদের জীবৎকালে অনুমোদনে ব্যর্থ। আর হয়ত পরিকল্পিত বইটির জন্যে বাকি প্রয়োজনীয় লেখা লিখে উঠতে না-পারা- এরই ফাঁক গলে থেকে গেছে এইসব রচনা। ষাটের দশকে প্রকাশিত বিখ্যাত কথাসাহিত্যের কাগজ ছোটগল্পের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন শুরু থেকেই। সেখানে লিখেছেনও প্রচুর, তখনকার তরুণতর এই লেখক। সেই থেকে মৃত্যুর মাস ছয়েক আগে সংবাদে প্রকাশিত গল্পও গ্রন্থনের অপেক্ষায় থেকে যায়। এমন অগ্রন্থিত উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ- নিবন্ধ, গ্রন্থালোচনা, কবিতা আর গৃহীত সাক্ষাত্তার এক করে হয়ে উঠেছে এই গ্রন্থ। ব্যক্তিমানুষ ও লেখক কায়েস আহমেদকে নিয়ে হাসান আজিজুল হক লিখেছেন : জীবনের কাছ থেকে কানাকড়ি পাবার আশা থাকলে কায়েস আহমেদ (১৯৪৮-৯২) এমন স্বেচ্ছামৃত্যু মেনে নিতেন না।... পুরোপুরি নাকচ করে নিজের জীবনকে তিনি জুতোর তলার শুকনো ঘাসের মতো পিষে ফেলেছিলেন।... গ্লানিতে জরজর, অপমানে ভূ-শায়ী, নির্যাতন পেষণ শোষণে জীর্ণ ফুটিফাটা, নিষ্করুণ মৃত্যুতে বিবর্ণ, জীবিকার যুদ্ধে ক্লান্তিতে অবসিত, হিংস্র হত্যায় হিঙুল- মানুষের সমাজের এই তিনি দেখেছিলেন।... কায়েসের লেখায় তাই নির্বোধ অচেতন ভয়ানক অস্তিত্বের যুদ্ধ, শিশ্ন ছিড়ে-তোলা মাস্তানিতর একচ্ছত্র রাজত্ব, ক্রুদ্ধ আমূল উৎপাটন, সমাজের একেবারে তলার পাঁকে নারী পুরুষের মরণপণ জাপ্টাজাল্টি।... কায়েসই তো বিফল খুঁজে বেড়াবেন বাস্তবের শিকড়, যে শিকড় তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন নিজের জীবনে, যে শিকড়কে তিনি নিজে অন্ধকারের মধ্যে তলিয়ে যেতে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এই মূল্যায়ন তাঁর গ্রন্থিত রচনার নির্দিষ্ট পাঠকগোষ্ঠী আর বন্ধুবৃত্তের চেনা কায়েস আহমেদ সম্পর্কে যথার্থ। কিন্তু এইসব অগ্রন্থিত রচনায় উত্তীর্ণকৈশোর থেকে মধ্যজীবন পর্যন্ত আমাদের চোখের আড়ালে থাকা যে কায়েস আহমেদ উন্মোচিত হন, তাও এর ব্যতিক্রম নয় কোনোভাবে, বরং সম্পূরক।
বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক! সাধ্যের মধ্যে থাকলে বইটি কিনবেন এই প্রত্যাশা রইলো।
0 Comments