‘যেসব সায়েবমেম কলকাতাকে ভালবেসেছিলেন’— উৎসর্গপত্র থেকে গ্রন্থটির বিষয় ও বক্তব্য সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা সম্ভব। কোম্পানির আমলে কলকাতায় বসবাসকারী সাহেব-মেমদের জীবনের নানা বর্ণময় ছবি ফুটে উঠেছে আলোচনা প্রসঙ্গে। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে ভারত তথা কলকাতা হয়ে ওঠে ইংরেজদের ভাগ্যান্বেষণের কেন্দ্রবিন্দু। বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে পরিণত হলেও রাজা হওয়ার প্রকৃত যোগ্যতা তাঁদের অনেকেরই ছিল না। বস্তুত তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিল দারিদ্র থেকে মুক্তির পথ খুঁজে, কম সময়ে বিপুল ধনরাশি সঞ্চয় করে স্বদেশে ফেরা— ইংরেজ সাহেবদের একাংশই সেই সময়ে এই পদ্ধতি অনুসরণ করেছিলেন। তবে, এই গতে বাঁধা ঐতিহাসিক তথ্যের বাইরে, সেই সময়ে গড়ে উঠেছিল ইংরেজদের কলকাতাকেন্দ্রিক নিজস্ব সামাজিক-সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি। আঠারো শতকের সূচনা থেকে উনিশ শতকের চল্লিশের দশক পর্যন্ত কলকাতা কিন্তু কেবলমাত্র সাহেবদের কাছেই আকর্ষণের প্রধান বিষয় হয়ে থাকেনি। ব্রিটিশ মেমদের মধ্যে যাঁরা এখানে এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই কলকাতার টানে এখানে আমৃত্যু থেকে গিয়েছিলেন। গ্রন্থকার নিখিল সুরের ভাষ্যে প্রকাশ পেয়েছে সেই সময়কার ধারাবাহিক চিত্র। ‘কলকাতার সায়েব সমাজ’-এর পাশাপাশি এসেছে ‘নিচুতলার সায়েবমেম’-র যাপনচিত্রটি। ‘নিচুতলার সায়েবমেম’ নিবন্ধে কোম্পানির সামরিক ও অসামরিক কর্মচারী ব্যতিরেকে উঠে এসেছে অন্যান্য পেশায় (যেমন—মিশনারি, ব্লক ও ঘড়ি নির্মাতা, কোম্পানির এজেন্ট, ছুতোর মিস্ত্রি, বই বিক্রেতা, ছাপাখানার মালিক) নিযুক্ত সাহেবদের কথা। ইংরেজদের মধ্যে সে সময়ে প্রচলিত উচ্চ-নীচের ভেদাভেদ নীতিটিও প্রবন্ধকার নানা ঘটনা এবং প্রসঙ্গ উল্লেখের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন। এছাড়াও ‘কলকাতায় সায়েবদের অস্তিত্বের প্রাথমিক সংকট’, ‘মেমসায়েবদের মতিগতি’, ‘কলকাতার সায়েবদের সায়েবিয়ানা’-সহ অন্যান্য প্রবন্ধের মাধ্যমে তৎকালীন সময়চিত্রটি স্পষ্ট। সহজ-সরল এবং তথ্যনিষ্ঠ ব্যাখ্যার সঙ্গে গ্রন্থটি রঙিন চিত্র (‘সায়েবদের হুঁকোবিলাস’, ‘সায়েবদের দিশি নর্তকীর নৃত্য উপভোগ’, ‘ভৃত্যের পদসেবা’) সংবলিত, যার মাধ্যমে ইংরেজদের বিলাস-বহুল জীবন সম্পর্কে সহজেই ধারণা করা যায়।
বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক! সাধ্যের মধ্যে থাকলে বইটি কিনবেন এই প্রত্যাশা রইলো।
0 Comments