সুনীতি সেনের জন্ম ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে, জীবৎকাল ৬৮ বছর। তাঁর জন্মের মাত্র ক’বছর আগে বেথুন স্কুলের প্রতিষ্ঠা। মেয়েদের মধ্যে পড়াশোনার ভারী চল হয়েছে। বিদ্যালয়ের গাড়ির গায়ে লেখা থাকত–কন্যাপেবং পালনীয়া শিক্ষাতিযত্নতঃ। কেশবচন্দ্র বিলেত থেকে নানা বিষয়ে শিক্ষিত হয়ে এসে স্ত্রীশিক্ষা ও তাঁদের উন্নতির জন্যে ব্রাহ্মসমাজে একটি বিশেষ শাখা খোলেন। পরবর্তীকালে শিয়ালদহের অনতিদূরে ভিক্টোরিয়া ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠা তাঁর অন্যতম কীর্তি, যা এখনও বর্তমান। সুতরাং সুনীতি শিক্ষালিপ্সু হবেন, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। জন্মেছিলেন বাপের বাড়িতে। এর মধ্যে ধর্মগত কারণে কেশবচন্দ্রকে পিত্রালয় ছাড়তে হল, আশ্রয় নিলেন দেবেন্দ্রনাথের জোড়াসাঁকোর বাড়িতে সস্ত্রীক। সেখানেই সুনীতির বড়দার জন্ম। সেখানেই কেশবচন্দ্রের ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা। আবার সেখান ছেড়ে পুরনো বাড়িতেই ফিরে আসতে হল সন্তান-সন্ততি সমেত। দেবেন্দ্রনাথ ডাকতেন ব্রহ্মানন্দ। কিন্তু ব্রাহ্ম-আচরণে জাতিভেদ এবং দেবেন্দ্রনাথের আভিজাত্যের তৌল অবস্থানে থাকা গেল না। সে ইতিহাস আলাদা। কিন্তু এই চলে যাওয়া নিয়েই বইয়ের সূচনা। এবং সূচনাংশেই বাবার প্রতি তাঁর আমৃত্যু শ্রদ্ধা এবং মমত্ব গোটা বইয়ের সর্বত্র। লর্ড ডাফরিন যখন বলেন ‘তোমার পিতার মত রূপবান পুরুষ আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি’, তাঁর গোলাপি পদতল ‘কোনো সাধারণ মানুষের নয়’ থেকে শুরু করে নিজের বিয়ে প্রসঙ্গে কেশবচন্দ্র মিথ্যাচারী– এই উক্তিসমূহের প্রতিবাদ কেশবের মুখে এবং কন্যার ভাবনায় যে মূর্তি ধারণ করেছিল, তা এই গ্রন্থের প্রতিটি পর্ব নির্মাণ করেছে। ‘বাপের দিকে মেয়ের নেওটা’ প্রবাদটি সুনীতির জীবনের প্রতিপর্বকে রচনা করেছে। সরলতা যে অপরাধ নয়, এই আত্মস্মৃতি শুধু তাঁর স্মৃতিভাষণ নয়, জগৎসম্মুখে সত্যের প্রচার হয়ে উঠেছে।
বইটির মূল ইংরেজির লিঙ্ক দেওয়া হল।
বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক! সাধ্যের মধ্যে থাকলে বইটি কিনবেন এই প্রত্যাশা রইলো।
0 Comments