Ticker

6/recent/ticker-posts

প্রবাসের হিজিবিজি - বাদল সরকার

amarboi

প্রবাসের হিজিবিজি

বাদল সরকার

যা কিছু পাবার আছে সব পেয়ে গেছি, এবং পেয়ে কচু হয়েছে—এ কথাটা অভদ্ররকম সত্যি। আরো পাবো, এবং পেলে চারটে হাত নির্ঘাৎ গজাবে-এ আশাটাও শোচনীয়রকম মিথ্যে। অতীত ভবিষ্যৎ এখনো বিপরীতমুখী, স্বপ্ন আছে বলেই। ভবিষ্যৎটাকে ভাঁজ করে অতীতের দিকে ফিরিয়ে দিতে পারলেই স্বপ্ন ফুরোয়। কিম্বা স্বপ্ন ফুরোলেই সেটা করা যায়। একশো আশি ডিগ্রী কোণ শূন্য ডিগ্রী হয়ে যায়। বর্তমানটাও একটা আবছা না-জানা ভবিষ্যতের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে অনির্দিষ্ট হয়ে না থেকে সীমাবদ্ধ সুনির্দিষ্ট বিন্দু হয়ে যেতে পারে।

আধুনিক বাংলা থিয়েটারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠার আগে বাদল সরকার কর্মসূত্রে লন্ডন, প্যারিস এবং নাইজেরিয়ায় কাটিয়েছিলেন। তাঁর প্রবাস জীবন যেমন ছিল বৈচিত্র্যময়, তেমনই কলকাতার প্রতি তাঁর অমোঘ টান সেই পর্বে ছিল তীব্রতর। সেসব কথা কখনও প্রিয়জনদের চিঠিতে কিংবা রোজনামচার আকারে তিনি লিখে গেছেন। সঙ্গে সঙ্গে নাটক নিয়ে ব্যক্তিগত দর্শনচিন্তাও ফুটে উঠেছে এই সংকলনে। এই বইয়ে যেমন ব্যক্তি তরুণ বাদল সরকার স্পষ্ট হয়েছেন, যিনি আর্থিক অনটনকে উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলা থিয়েটারের এক নতুন ভাষ্য আবিষ্কারে মেতে ছিলেন, অন্যদিকে সেই পর্বে প্রবাস জীবনের চলমান ছবি এক অনামী ভারতীয়ের কলমে অন্য আস্বাদ এনে দিয়েছে। ফলে বলাই যায় ব্যক্তিগত পরিসরে লেখা এই সংকলন একজন অনামী তরুণের ‘বাদল সরকার' হয়ে ওঠার আঁতুড়ঘর। তাঁর নাটক কিংবা যাপনকে বুঝে উঠতে আকরগ্রন্থ হিসেবে মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য এই বই। অনুষ্টুপ এই সংকলন পুনঃপ্রকাশ করে বাংলা থিয়েটারের সেই নতুন অধ্যায়ের সূচনাবিন্দুকে আবার ফিরিয়ে আনল ।

বাদল সরকার (প্রকৃতনাম সুধীন্দ্র সরকার) ১৫ জুলাই ১৯২৫ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে স্কটিশ চার্চ কলেজের বিজ্ঞানের স্নাতক, পরে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হন। পরবর্তীকালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে স্নাতকোত্তর। তিনি ছিলেন টাউন প্ল্যানার, সেই সূত্রে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে টাউন পরিকল্পনায় কাজ করেছেন। আন্তর্জাতিক নাট্যব্যক্তিত্ব বাদল সরকার কলকাতার থার্ড থিয়েটার (নন-প্রসেনিয়ম) আন্দোলনের মুখ্য প্রবক্তা। তাঁর লেখা বিভিন্ন নাটক তাঁর প্রতিষ্ঠিত শতাব্দী এবং বহু সমধর্মী থিয়েটার দল ১৯৭০-এর দশক থেকে অভিনয় করে আসছে। ‘বাবু থিয়েটার’কে রঙ্গমঞ্চের বাইরে প্রাণ প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত।

১৯৬৮ সালে সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, ১৯৭২ সালে পদ্মশ্রী সম্মান, ১৯৯৭ সালে ভারত সরকার সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি-র সর্বোচ্চ সম্মান ‘রত্ন সদস্য’ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্মানে তিনি ভূষিত।

২০১০ সালের ১৩ মে কলকাতায় তাঁর প্রয়াণ ঘটে।



বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক! সাধ্যের মধ্যে থাকলে বইটি কিনবেন এই প্রত্যাশা রইলো।

Post a Comment

0 Comments