Ticker

6/recent/ticker-posts

পুরোনো কাসুন্দি - বাদল সরকার (দুটি খণ্ড একত্রে)

পুরোনো কাসুন্দি - বাদল সরকার

পুরোনো কাসুন্দি - বাদল সরকার (দুটি খণ্ড একত্রে)

খোলা আকাশের নীচে যিনি নাটককে নিয়ে গিয়েছিলেন সেই নাট্যব্যক্তিত্ব বাদল সরকার এককালে নাটক লেখা, পরিচালনা আর থিয়েটার আন্দোলনকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর থিয়েটার ভাবনা, আন্তর্জাতিক স্তরে থার্ড থিয়েটারের বিভিন্ন রকমফের, জর্জি গ্রটস্কি থেকে পিটার ব্রুক ছুঁয়ে আমাদের বাংলার যাত্রাপালা, পালাগান ইত্যাদি ফর্ম নিয়ে নিরন্তর ভেবে গেছেন। প্রথমদিকে তাঁর থিয়েটার ভাবনার সঙ্গে তখনকার প্রসেনিয়ম থিয়েটারের কর্তাব্যক্তিদের বারবার সংঘাত ঘটেছে। কৈশোর ও যৌবনে কম্যুনিস্ট পার্টির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং তৎকালীন ইতিহাস বিবৃত হয়েছে। এখানে তিনি যতবার প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন, ততবার আরও সবল হয়ে ফিরে এসেছেন। একটা সময় (১৯৭৬ সালে) নিজস্ব নাট্যদল তৈরি করেছেন। অনুপ্রাণিত করেছেন বহু তরুণ নাট্যকর্মীকে থার্ড থিয়েটার আন্দোলনে শামিল হতে। পুরোনো কাসুন্দি সেইসব থিয়েটারের বাইরে থিয়েটারের কথা। তাঁর মতো কৃতীপুরুষ যখন পুরোনো প্রসঙ্গ নিয়ে কলম ধরেন, তখন তা ব্যক্তিগত উচ্চারণ হয়েও কোথাও যেন সমকালীন ইতিহাসকে ছুঁয়ে ফেলে। সে ইতিহাসের পরতে পরতে জড়িয়ে আছে বিস্ময়। গত শতকের ছয়ের দশক থেকে পরবর্তী প্রায় অর্ধশতকের থিয়েটারের লিখিত ইতিহাস এই সংকলন। কেবল নাট্যপ্রেমীদের জন্য নয়, যে-কোনো বাঙালির হাতের কাছে রাখার মতো এই সংগ্রহ।


কুউউউ ঝিক ঝিক ঝিক ঝিক —ঘুমপাড়ানি গান। সারারাত চলবে এই গান। কিন্তু একটুখানি শুনেই ঘুমে তলিয়ে যাওয়া, শৈশবের ঘুম বড়ো গাঢ় ঘুম ।

শৈশবের ঘুম। শৈশব। শৈশবের স্মৃতি বড়ো এলোমেলো হয়। বিশেষ করে একজন অশীতিপর বৃদ্ধের কাছে।

কারো কারো কাছে শৈশবের স্মৃতি সুখকর, হয় তো বা পরবর্তী দুঃখময় ঝামেলায়-ভোগা জীবনের তুলনায়। কারো কাছে সুখকর বা দুঃখময় কোনোটাই নয়, হয় তো দুঃখ-কষ্ট-ঝামেলা-সমস্যা অনেক থাকলেও তার পরবর্তী জীবনে অনেক কিছু প্রাপ্তিও ঘটেছে ক্ষতিপূরণ হিসাবে। তেমন মানুষের কাছে শৈশবটা শৈশবই, সুখ-দুঃখের কথা ওঠে না সেখানে।

আমারও বোধ হয় তাই।

সারারাত ধরে কুউউউ ঝিক ঝিক করা ঐ রেলগাড়িতে যাত্রী থাকে না, সাধারণ মালপত্রও থাকে না। মাল একটাই—গাড়ি গাড়ি জঞ্জাল। ও জঞ্জাল চলে যাবে ধাপার মাঠে, সেখানে 'সার হয়ে যাবে, ঢ্যাঁড়স ফলাবে'।

আর একটা কুউউ-ঝিকঝিকে চড়ে দূরপাল্লার পথ লক্ষ্মৌ, সেখানে কোনো আত্মীয়র বাড়ি চার দিন কাটিয়ে আবার কুউউ-ঝিকঝিক দেরাদুন। বিশাল বাগানে ঘেরা দাদামামুর বাংলোবাড়ি, পেছনে লাগোয়া খাঁচা, গোটা বারো চোদ্দ উঁচু জাতের দামী কুকুর, পালা পালা করে তাদের খাঁচা থেকে মুক্ত করা হয়। আর একটা ভীষণদর্শন বুলডগ, যাকে একদম আলাদা শিকল-বাঁধা অবস্থায় ঘুরিয়ে আনতে হয় স্বয়ং দাদামামুকে, কোনো ভৃত্যকে খাতির করে না সে।

দাদামামু। মায়ের মামা। সেনাবাহিনীর ডাক্তার, কর্নেল, তারপর অবসর, দেরাদুন। দুই মামু দুই মাসী, তারা সব সাহেব মেম বনে গেছে, বাংলা ভাষার সঙ্গে সম্পর্ক নেই আর।

দাদামামুর ছোট বোন ভার্জিনিয়া মেরী বসুও ডাক্তার। বস্তুত তিনি সারা ভারতের প্রথম তিনজন মহিলা ডাক্তারের একজন। পূর্ণচন্দ্র নন্দী নামে একজন ডাক্তারকে বিবাহ করে তিনি ভার্জিনিয়া মেরী নন্দী। এঁরা তিনজনেই একসঙ্গে ডাক্তারি পড়েছিলেন।

এঁরা ভারতীয় খ্রীস্টান ।

দিদিমা জন্মসূত্রে খ্রীস্টান। তাঁর বাবা শ্যামবাজারের বনেদী বসু পরিবারের সন্তান, তিনি কেন খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তা জানা নেই। দাদামশাই কেন তা করেছিলেন কেউ বলে না দিলেও মোটামুটি আন্দাজ করা যায়। পূর্ণচন্দ্ৰ ডাকাবুকো ছেলে, বারো না পনেরো বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে দানাপুর চলে গেছিলেন, কেন তা কে জানে। শুধু দানাপুর নামটা স্মৃতির মধ্যে রয়ে গেছে হাঁ করে ডাকাবুকো মানুষটার মুখে গল্প শুনে। দাদামামু যখন বিলেত গেলেন, বলে গেলেন—পূর্ণ, ওকে দেখিস। ডাক্তারি বইগুলো ভাইবোন ভাগাভাগি করে পড়তেন, সেগুলোও তিনি সঙ্গে নিয়ে গেলেন। সেই দেখাশুনো করতে করতে দাদামশাই তাঁকে বিবাহ করে ফেললেন নিজে খ্রীস্টান হয়ে গিয়ে।

প্রতিষ্ঠাবান ডাক্তার, মেছোবাজার অঞ্চলে মার্কাস স্কোয়ারকে দক্ষিণে রেখে প্রকাণ্ড তিনতলা বাড়ি, তার উপর প্রিন্সেপ স্ট্রীটে একটা, বালিগঞ্জে একটা। এছাড়া ঘুম্ আর দার্জিলিং শহরের মাঝামাঝি জায়গায় দুটো। ধাপাযাত্রী জঞ্জালবাহী গাড়ির কুউউ ঝিকঝিকের সঙ্গে তাই দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের খেলনা ট্রেনের কুউউ-ঝিকঝিক শৈশবস্মৃতিতে মিশে আছে।

সম্পূর্ণ বইটি পড়ার লিঙ্ক ডাউনলোডে।

 


বই নিয়ে শুধুমাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, বই নিয়ে শুধু মাত্র বই নিয়েই আমাদের এই প্রয়াস। ধ্বংস ও ধসের সামনে বই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ। বই আমাদের মৌলিক চিন্তাভাবনার শাণিত অস্ত্র। বইয়ের অস্তিত্ব নিয়ে চারিদিকে আশঙ্কা, নতুন প্রজন্ম চকঝমকের আকর্ষণে বইয়ের দিক থেকে ঘুরিয়ে নিচ্ছে মুখ। আমাদের এ আয়োজন বইয়ের সাথে মানুষের সম্পর্ককে অনিঃশেষ ও অবিচ্ছিন্ন করে রাখা। আশাকরি আপনাদের সহযোগিতায় আমাদের এই ইচ্ছা আরোও দৃঢ় হবে। দুনিয়ার পাঠক এক হও! বাংলা বই বিশ্বের বিবিধ স্থানে, সকল বাংলাভাষীর কাছে সহজলভ্য হোক! সাধ্যের মধ্যে থাকলে বইটি কিনবেন এই প্রত্যাশা রইলো।

Post a Comment

0 Comments